E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ১১ সংখ্যা / ২৮ অক্টোবর, ২০২২ / ১০ কার্ত্তিক, ১৪২৯

অহোঃ - তিনি রাজা হইলেন...

বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়


‘আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে’। ঋষি মশাই পূজায় বসিবেন। অতএব শব্দমালা হইতে অধুনালুপ্ত ৯-কার ডিগবাজি খাইয়া আনন্দ প্রকাশ করিতেছে। নয় মণ তেল পোড়াইলেও রাধা নৃত্য করিবেন কিনা তাহাতে ঘোর সংশয় যদিও বিদ্যমান। তবে ইহাতে দোষের কিছু নাই। ভারতবাসী মাত্রেই ইহাতে অল্পবিস্তর অভ্যস্ত। মাঝে মাঝেই তাহাঁরা পুলকে আপ্লুত হইয়া পড়েন। মহাকাশ হইতে ওম ধ্বনিত হইবার হোয়াটসঅ্যাপীয় সংবাদেও তাহাঁরা নাচেন। আবার কলাপের চক্ষুর জল পান করিয়া কলাপীর গর্ভধারণের বার্তাতেও তাহাঁরা নাচেন। উপলক্ষ পাইলেই হইলো। আসমুদ্র হিমাচল উদ্বাহু হইয়া নৃত্য শুরু হইয়া যায়। সুতরাং হরিদাসের খুল্লতাতের মাসতুতো শালীর পিতামহীর জ্যেষ্ঠ শ্যালকের পিতৃব্যপত্নীর আপন চাচাতো ভাইয়ের পৌত্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হইলে এই উল্লাস স্বাভাবিক। তাহার উপর পশ্চিমি শ্বেত চর্মের দেশের রাজ্যপাট বলিয়া কথা। চাটিতে চাটিতে শুষ্ক হইয়া যাওয়া জিহ্বার অগ্রভাগে যৎকিঞ্চিত লালাঝোলা অবশিষ্ট ছিল তাহা গড়াইয়া গড়াইয়া পড়িতেছে। যদিও অসভ্য কালা নেটিভদিগের এই অতি উৎসাহের প্রাবল্যে সভ্য শ্বেত চর্মধারীগণের উৎফুল্ল হইবার সম্ভাবনা কিয়দংশেও নাই। তাঁহাদের মতে নেটিভগণ অসভ্যই থাকে। তাহারা নাচিলেও অসভ্য, গাহিলেও অসভ্য, শিক্ষিত হইলেও অসভ্য। তাহাদের একটাই পরিচয়। তাহারা নেটিভ। কালা আদমি। ঋষি শুনক ও তাঁহার পত্নীতে আলিশা চিনয়ের ন্যায় একশত ত্রিংশ কোটি ভারতবাসী সাক্ষাৎ রাম সীতার দর্শন পাইলেও ভারতবাসী নেটিভই থাকিবে। দুইশত বছরের লুণ্ঠনের ইতিহাস। তাহা বড়োই জটিল। কথামৃতের ভাষায় স্বর্ণ দোকানের মালিক ও কর্মচারীর বার্তালাপের ন্যায়- “কেশব? কেশব?” “গোপাল গোপাল।” “হরি হরি।” “হর হর।” যাহার অর্থ - ‘এরা কারা?’ ‘গোরুর পাল’। ‘চুরি করি?’ ‘চুরি কর’।

চাটাচাটি, নাচানাচির গল্প থাক। এসব চলুক। চলতে থাকুক। ২০২৪-এর লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসবে এসব ততই বাড়বে। অযোধ্যায় আলোর উৎসব হবে। প্রধানমন্ত্রী বহুরূপীর মতো পোশাক পালটে পালটে কখনও ডান দিকে, কখনও বাঁ দিকে হাত নাড়বেন। অন্য কোথাও আরও খরচ করে আরও বড়ো মূর্তি স্থাপিত হবে। সেন্ট্রাল ভিস্টা চালু হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে আরও অনেক ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির ঋণ মকুব হবে। বিলগ্নিকরণ দেখিয়ে আরও অনেক সরকারি সংস্থাকে বেচে দেওয়া হবে। আদানি আম্বানির সম্পদ আরও বাড়বে। আমরা বরং তাই এসব গূঢ় বিষয় ছেড়ে কিছু তুচ্ছ বিষয়ে মনোনিবেশ করি। কারণ, বিষয়ের তো অভাব পড়েনি। ঋষি শুনক কোন লতায় পাতায় ভারতীয়, কিংবা কোন প্যাঁচ পয়জার সমীকরণে হিন্দু তা আবিষ্কারের জন্য হোয়াটস অ্যাপ ইউনিভার্সিটির গোচোনাপায়ী আবিষ্কারকরা থাকুক। নাগপুর থাকুক। এর থেকেও বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাজারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমরা বরং সেইসব নিয়ে একটু নাড়াঘাঁটা করি।

প্রথমে আলোচনা করা যেতে পারে ‘পোভার্টি অ্যান্ড শেয়ার্ড প্রসপারিটি ২০২২’ শীর্ষক রিপোর্ট নিয়ে। গত ৬ অক্টোবর যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে বিশ্ব ব্যাংক। ভারতীয় সংস্থা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই রিপোর্ট তৈরি করেছে বিশ্ব ব্যাংক। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সালে ভারতে কমপক্ষে ৫.৬ কোটি মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে পৌঁছে গেছেন। বিশ্ব ব্যাংক জানিয়েছে, ২০১১ সালের পর ভারত সরকার দারিদ্র্য নিয়ে কোনও রিপোর্ট প্রকাশ করেনি। তাই সিএমআইই-র সমীক্ষার ভিত্তিতে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, সিএমআইই বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই সমীক্ষার তথ্য সংগ্রহ করেছে।

বিশ্ব ব্যাংকের আগে এক রিপোর্টে জানিয়েছিল, ২০১৭ সালে ভারতে দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা ছিল ১০.৪ শতাংশ। যাঁদের দৈনিক আয় ১৫৫ টাকা। পরে সংশোধিত রিপোর্টে জানা যায়, ওই বছর আসলে ১৩.৬ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে ছিলেন। ২০১৯-২০ সালের রিপোর্টে সেই সংখ্যা কিছুটা কমেছে। বর্তমান রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সালে ভারতের ১০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করেন। বর্তমানে যদিও আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য সীমার নিয়মে কিছু পরিবর্তন হয়েছে। আগে যা ছিল দৈনিক ১৫৫ টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৭৫.৫০ টাকা।

অন্যদিকে, বিশ্ব ব্যাংক ছাড়াও অন্য এক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ড বা আই এম এফ-ও দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা নিয়ে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। যে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভারতে ২০২০ সালের পর নতুন করে ২.৩ কোটি মানুষ দারিদ্র্যের সম্মুখীন হয়েছেন। এই গবেষণা পত্র প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘনিষ্ঠ অর্থনীতিবিদ সুরজিৎ ভাল্লা, করণ ভাসিন এবং অরবিন্দ ভিরমানি। সুরজিৎ ভাল্লা প্রধানমন্ত্রী মোদির অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি এই সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে আইএমএফ’র ভারতের কার্যকরী অধিকর্তা হন। দুই রিপোর্টে এত হেরফের কেন তা অবশ্যই ‘রাম জানে’।

এই মাসেই প্রকাশিত হয়েছে গ্লোবাল হাঙ্গার ইন্ডেক্স। সমীক্ষার ভিত্তিতে আইরিশ সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং জার্মান সংস্থা ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফ যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। যে রিপোর্ট অনুসারে বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে বিশ্বের ১২১টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১০৭। ২০১৩ সালে যা ছিল ৬৩, ২০২০ সালে যা ছিল ৯৪, ২০২১ সালে যা ছিল ১০১, ২০২২ সালে তা ১০৭। অর্থাৎ, মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারত নেমেছে ১৩ ধাপ। আর ন’বছরের হিসেব করলে ভারত নেমেছে ৪৪ ধাপ। যে ন’বছরের মধ্যে আট বছরই দেশের শাসনক্ষমতায় নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই বছরের সূচকে পাকিস্তান ৯৯ নম্বরে, শ্রীলঙ্কা ৬৪ নম্বরে, বাংলাদেশ ৮৪ নম্বরে, নেপাল ৮১ নম্বরে এবং মায়ানমার ৭১ নম্বর স্থানে রয়েছে।

এই রিপোর্ট প্রকাশের পরেই কেন্দ্রীয় সরকারের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের তরফে গত ১৬ অক্টোবর এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের রিপোর্টে ‘গুরুতর পদ্ধতিগত সমস্যা রয়েছে।’ শুধু তাই নয়, এই রিপোর্টে ‘দেশের নাগরিকদের খাদ্য সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে ভারত সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে তা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।’ উল্লেখ্য, গতবছরেও এই রিপোর্ট মানতে অস্বীকার করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার।

চারটি ক্ষেত্রের ওপর সমীক্ষা করে গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স স্কোর গণনা করা হয়। অপুষ্টি, পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের উচ্চতার কারণে কম ওজন, পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের বয়সের অনুপাতে কম উচ্চতা এবং পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের মৃত্যুর হার। যেসব ক্ষেত্রে ভারতের স্কোর কমতে কমতে এখন এসে দাঁড়িয়েছে ২৯.১।

এই প্রসঙ্গে গত ১৫ অক্টোবর এক ট্যুইট বার্তায় সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়েছেন, ‘বিপজ্জনক, ২০১৪ সাল থেকে বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারতের অবস্থান খারাপের দিকে।... গত সাড়ে আট বছরে ভারতের এই অন্ধকার যুগের জন্য সরকারকে দায় নিতে হবে।...’

যেহেতু সত্যজিৎ রায় বলে গেছেন, ‘অনাহারে নাহি খেদ, বেশি খেলে বাড়ে মেদ’ - সেই বাক্য শিরোধার্য করেই সম্ভবত দেশের সরকার এগোচ্ছে। আমরাও নাহয় সেই পথেই চলে বিষয়ান্তরে চলে যাই। খিদে টিদে নিয়ে অত ভেবে কাজ নেই। রামমন্দির হচ্ছে তো। চিন্তার কিছু নেই। তাই এবার বরং একটু ভারতীয় টাকার দামের দিকে নজর দেওয়া যাক। গত ১৫ অক্টোবর, শনিবার ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, ভারতীয় মুদ্রার (টাকা) মূল্যে পতন হচ্ছে না। আসলে, ডলার ক্রমাগত শক্তিশালী হচ্ছে। বিশ্বের অন্যান্য মুদ্রার থেকে তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থায় রয়েছে ভারতীয় মুদ্রা। দেশের মাননীয় অর্থমন্ত্রী পেঁয়াজ খুব বেশি খান না আমরা জানি। তাই পেঁয়াজের দাম বাড়লেও তাঁর কিছু যায় আসে না সেটাও জানি। নিজের হাতে রসাতলে পাঠানো অর্থনীতির হাল হকিকত বুঝতে তিনি মাঝে মাঝে বাজারে সারপ্রাইজ ভিজিট করেন। সেটাও জানি। কিন্তু টাকার দাম পড়লেও যে টাকার দামে পতন না হয়ে ডলার শক্তিশালী হয় সেটা সত্যিই জানা ছিল না। ভাগ্যিস উনি বিদেশের মাটিতে গিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনটা করেছিলেন। তাই তো এরকম একটা চরম সত্য আমরা জানতে পারলাম। এই যুক্তিতেই তো বলা যায়, দেশের মানুষ গরিব হচ্ছেন না। আসলে আদানি আম্বানি বড়োলোক হচ্ছেন। অথবা দেশের মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে এরকম নয়, আসলে বড়োলোকেদের পুষ্টি আরও বাড়ছে। আগামীতে তিনি এরকম আর কী কী ব্রেন স্টর্মিং বা মস্তিস্কে ঝড় তোলা উদাহরণ দেবেন কে জানে?

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর এই মন্তব্যের উত্তরে কংগ্রেস সাংসদ মনীশ তেওয়ারি ১৭ অক্টোবর এক ট্যুইটবার্তায় বলেন, ‘‘অর্থনীতি আমি জানি না। কিন্তু যখন ভারতীয় টাকা ডলারের অনুপাতে ৮২.৩৭ এ গিয়ে পৌঁছেছে, তখন অর্থমন্ত্রী সীতারামন বলেছেন টাকার দাম পড়ছে না, ডলার শক্তিশালী হচ্ছে। যে বক্তব্য নিঃসন্দেহে অর্থনীতিতে পিএইচডি পাবার যোগ্য।” তবে মণীশ তিওয়ারি যেসময় এই কথা বলেছিলেন তখন ভারতীয় টাকার দাম যা ছিল এই মুহূর্তে ভারতীয় টাকার দাম তার চেয়েও নিচে। ১৯ অক্টোবর পিটিআই জানিয়েছে আমেরিকান ডলারের অনুপাতে ভারতীয় টাকার দাম ৮৩.০১। ২০ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার টাকার দাম নামে ৮৩.০৬-তে। এই প্রসঙ্গে অবশ্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী মহোদয়। ২৬ অক্টোবর এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘লক্ষ্মী হলেন সমৃদ্ধির দেবী এবং ভগবান গণেশ যেকোনও বাধা-বিঘ্ন দূর করেন। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির জন্য আমাদের যেমন অনেক প্রচেষ্টা করতে হবে, তেমনই দেব-দেবীর আশীর্বাদ পেলে তবেই সেই প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হবে। ভারতীয় মুদ্রা এবং নোটের এক পিঠে যদি গান্ধীজি এবং অপর পিঠে গণেশজি ও লক্ষ্মীজির ছবি থাকে, তাহলে সারা দেশ তাঁদের আশীর্বাদ পাবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ইন্দোনেশিয়ায় প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ মুসলিম এবং ২ শতাংশেরও কম হিন্দু। তা সত্ত্বেও সেখানকার মুদ্রা এবং নোটে ভগবান গণেশের ছবি রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া যখন পারছে, তাহলে আমরা পারব না কেন? মার্কিন ডলারের নিরিখে ভারতীয় মুদ্রার দর দিনদিন কীভাবে কমছে তা দেশবাসী দেখতে পাচ্ছে।’’ সমস্যাটা অর্থনীতির নাকি হিন্দু মুসলিমের সেটা নিজেকে কৃষ্ণের অবতার দাবি করা কেজরি জানেন। তিনিই বা হঠাৎ কেন কেন্দ্রের ত্রাতা হিসেবে রাজ্যে রাজ্যে অবতীর্ণ হচ্ছেন সেটাও তাঁর এবং আরএসএস-এর পক্ষেই বলা সম্ভব। তবে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দেখানো পথে হেঁটে ভারতীয় টাকায় লক্ষ্মী গণেশের ছবি ছাপিয়ে টাকার দাম তোলা অথবা শুয়ে পড়া অর্থনীতির হাল ফেরানো যায় কিনা, সংকট থেকে উদ্ধার পাওয়া যায় কিনা তা একবার এক্সপেরিমেন্ট করে দেখা যেতেই পারে বোধহয়।

বহু বছর আগে এক ভদ্রলোক কিছু কথা বলে গেছিলেন। যার বাংলা করলে মোটামুটি এরকম দাঁড়াতে পারে - বিপ্লবের পরিস্থিতি তৈরি না হলে বিপ্লব অসম্ভব। তাছাড়াও, প্রতিটি বিপ্লবী পরিস্থিতি বিপ্লবের দিকে পরিচালিত করে না। তিনি আরও বলেছিলেন, যখন শাসক শ্রেণির পক্ষে কোনো পরিবর্তন ছাড়া তাদের শাসন বজায় রাখা অসম্ভব; যখন ‘উচ্চ শ্রেণির’ মধ্যে কোনো না কোনো সংকট দেখা দেয়, তখন শাসক শ্রেণির নীতিতে সংকট দেখা দেয়, যার ফলে নিপীড়িত শ্রেণির অসন্তোষ ও ক্ষোভ ফেটে পড়ে। ভদ্রলোকের নাম ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ। আর ঘটনা পরম্পরা বলছে এখনও অনেক পথ হাঁটা বাকি। তবে লড়াই ছাড়লে চলবে না।