E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৫৮ বর্ষ ২৪তম সংখ্যা / ২৯ জানুয়ারি, ২০২১ / ১৫ মাঘ, ১৪২৭

যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু’র ১২৫তম জন্মদিবস


নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ২৩ জানুয়ারি মিছিল, সভা, রক্তদান, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তিতে এবং প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় কলকাতা সহ রাজ্যজুড়ে পালিত হলো নেতাজির ১২৫তম জন্মদিন। ১৬টি বাম ও সহযোগী দলের পক্ষ থেকে দিনটিকে পূর্ব ঘোষণা মতোই রাজ্যের সর্বত্র দেশপ্রেম দিবস হিসেবে পালন করা হয়। কলকাতায় সকাল ১০টায় মহাজাতি সদনের সামনে থেকে সুসজ্জিত মিছিল শুরু হয়। ট্যাবলো, ব্যান্ড, ঢাক এবং প্রতিকৃতিশোভিত এই মিছিল সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে শেষ হয়। পদযাত্রায় অংশ নেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম, ফরওয়ার্ড ব্লকের বাংলা কমিটির সম্পাদক নরেন চ্যাটার্জি, আরএসপি’র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য, সিপিআই(এমএল) লিবারেশন নেতা কার্তিক পাল, সিপিআই(এম) এবং কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ। দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে নেতাজির মূর্তিতে মাল্যদান করেন নেতৃবৃন্দ। অন্যদিকে আন্দোলনরত কৃষকদের পক্ষ থেকে সারা ভারত কৃষক সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটির আহ্বানে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনে ‘আজাদ হিন্দ কিষান দিবস’ পালন করা হয়। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী কমিটির পক্ষ থেকেও ২৩ জানুয়ারি দেশপ্রেম দিবস উদ্‌যাপন করা হয়েছে। নেতাজি জন্মজয়ন্তী কমিটির সভাপতি অমল মুখোপাধ্যায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে বলেন, নেতাজি বরাবরই দেশনায়ক। এখন ভোটের জন্য যারা রাজনৈতিক কারণে নেতাজিকে ব্যবহার করতে চাইছেন তাদের ধিক্কার।

সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারের সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে বিমান বসু বলেন, নেতাজি প্রকৃতই দেশপ্রেমিক ছিলেন। কিন্তু এখন তাঁকে নিয়ে যা করা হচ্ছে তা শ্রদ্ধা প্রদর্শন কিনা সেটা ভেবে দেখার দরকার আছে। সুভাষচন্দ্র বসুর আত্মত্যাগ, দেশপ্রেমের উল্লেখ করে বসু বলেছেন, যারা স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেয়নি, ব্রিটিশদের কাছে মুচলেকা দিয়েছিল তারা এখন ক্ষমতায় বসে পরাক্রম দিবস পালনের কথা বলছে। অনুষ্ঠানে বাম ও কংগ্রেসের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

প্রসঙ্গত, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিবসকে দেশপ্রেম দিবস ঘোষণার দাবি এরাজ্যের বামপন্থীরা অনেকদিন ধরেই জানিয়ে আসছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে বামফ্রন্ট পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী এবং বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান বলেছিলেন, এই মুহূর্তে দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে নেতাজির দেখানো পথেই আমাদের হাঁটতে হবে। দেশের স্বাধীনতার জন্য নিঃস্বার্থভাবে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। উপলব্ধি করেছিলেন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সমস্ত রকম জাত, ধর্ম এবং বর্ণের বিভাজনকে মুছে ফেলতে হবে। তাঁর সেই শিক্ষা আজকের দিনেও খুবই প্রাসঙ্গিক। নেতাজির দেশপ্রেমের আদর্শকে দেশের প্রতি প্রান্তে পৌঁছে দিতে ২৩ জানুয়ারিকে দেশপ্রেম দিবস ঘোষণা করা হোক।

এদিকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল প্রাঙ্গণে নেতাজির জন্মদিবস উপলক্ষে মমতা ব্যানার্জির উপস্থিতিতে জয় শ্রীরাম বলার প্রেক্ষিতটিকে প্রচারের আলোয় আনার বিষয়টি রাজ্যের মানুষ সঙ্কীর্ণতার পরিচায়ক বলে মত উঠে আসছে। কার্যত নির্বাচনী প্রচারের অঙ্গ হিসেবে বিষয়টিকে দেখছেন অনেকেই।

বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এ প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে বলেছেন, কলকাতায় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকী পালনের সরকারি অনুষ্ঠানে যে স্লোগান তোলা হয়েছে তা অনুচিত। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ দেওয়ার সময় এ অন্যায় কাজ করা হয়েছে। রাজ্যের পক্ষে মর্যাদাহানিকর কাজ হয়েছে। এই ঘটনা নিন্দনীয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে মনে রাখতে হবে সরকারি অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে পরিণত করা ঠিক নয়।