৫৯ বর্ষ ১১ সংখ্যা / ২৯ অক্টোবর, ২০২১ / ১১ কার্ত্তিক, ১৪২৮
নেপথ্য ক্রীড়া
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
খেলা চলছে। একের পর এক খেলা হয়েই চলেছে। একটা ইভেন্ট শেষ হবার পর ভালো করে একদফা শ্বাস প্রশ্বাস ভিতর বাহির করার আগেই পরবর্তী টুর্নামেন্ট। ইউরো কাপ, কোপা আমেরিকা কাপ, অলিম্পিক্স, বিনোদিনী আইপিএল হয়ে গেছে। এখন চলছে টি-২০ ওয়ার্ল্ড কাপ। এরপরেই ওঁত পেতে দাঁড়িয়ে আছে আইএসএল। তারপরেই টেবিল ঠুকে ঠুকে আইপিএল-এ মানুষের নীলাম। প্রতিদিন নতুন নতুন খেলা দেখতে দেখতে পেট্রোল ডিজেলের স্কোর আজ কত সবসময় মনে না থাকলেও, কোন্ কর্পোরেট কত হাজার কোটি দিয়ে আইপিএল টিম কিনলেন তা ঠোঁটস্থ। তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কত মাস ধরে কৃষকরা অবস্থান আন্দোলন করছেন তা মনে না থাকলেও, টিকরি, সিঙ্ঘু, লখিমপুর খেরির কথা ভুলে গেলেও মেসি আর রোনাল্ডোর ট্রান্সফার ফি কত ছিল তা অনেকেই নোট করে রেখেছি। ‘খেলা হবে’ স্লোগান আত্মস্থ করার পর খেলা যে চলবে, চলতেই থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো খেলার পর খেলা, তারপর খেলা, তারপর আরও খেলা...। মান্না দে’র ‘নীলাম... নীলাম... নীলাম... নীলাম হল শুরু’ গানটা হঠাৎ মনে পড়ল। ‘এ খেলা চলছে নিরন্তর...’।
খেলা ১
প্রচার আর বাস্তব সবসময় এক হয়না। ওই যেরকম যোগীর উন্নয়নী বিজ্ঞাপনে কলকাতার ফ্লাইওভারের ছবি ঢুকে গেছিল। মোদিভক্তদের ভুয়ো প্রচারে নিউ ইয়র্ক টাইমস চলে এসেছিল। সেরকমই। ১০০ কোটি ভ্যাকসিন অথবা ১০০ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন - ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে পুরো বস্তুটা গলাধঃকরণ করার আগেই পি আর ইভেন্ট শেষ। ভ্যাকসিন, মানুষ, ১০০ কোটির ঘূর্ণিতে ঘুরপাক খাবার মাঝেই ঢাক ঢোল পিটিয়ে প্রচার যা হবার সেটা হয়ে গেছে। ২০২১ শেষ হবার আগেই ১০০ শতাংশ ভ্যাকসিনেশন সম্পূর্ণ করে ফেলার ঘোষণা শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা। ১০০ কোটির মেকি প্রচার শুনে অনেকের মনেই দৃঢ় বিশ্বাস যে কাজটা হয়ে গেছে। ভারতেই সবথেকে বেশি ভ্যাকসিন অথবা বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। যদিও ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসরি গ্রুপ অফ ইমিউনাইজেশন (এনটিএজিআই)-এর প্রধান ডাঃ এন কে অরোরা ইউএনআই-কে জানিয়েছেন, প্রায় ২২ কোটি মানুষ, যাঁরা ভ্যাকসিন পাবার যোগ্য, তাঁরা এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিনের একটিও ডোজ পাননি। তথ্য বলছে দেশের মাত্র ২১ শতাংশ মানুষই এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিনের দুটো ডোজ পেয়েছেন। আর covid.ourworldindia.org-র তথ্য অনুসারে মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে তৈরি পরিসংখ্যান আরও ভয়ংকর। যেখানে দাবি করা হয়েছে ২৩ অক্টোবর ২০২১ পর্যন্ত ভারতে ৬৮১ মিলিয়ন মানুষ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের একটিও ডোজ পাননি। ভ্যাকসিন না পাওয়া মানুষের সংখ্যার শীর্ষে ভারত। তবে সে সব যাই হোক, এসব ছেঁদো কথায় গুরুত্ব না দেওয়াই ভালো। আপাতত খেলা হচ্ছে। আমরা দেখছি...।
খেলা ২
খেলা হবে, খেলা হবে-র মাঝখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ খেলা টুক করে সেরে ফেলা হয়েছে। আমাদের যেহেতু সব খেলার খেয়াল রাখার দায় নেই তাই ওটাও আব্বুলিশ হয়ে গেছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও একবার জানিয়েছেন, কোনো হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিতে অস্বীকার করলে তার লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে। আগেও বলেছিলেন। তারপরেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেওয়া হয়নি এরকম উদাহরণ আছে। আবার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করে রাজ্য সরকারের কাছে ৬৪ কোটি টাকা বকেয়া - এরকম বেসরকারি হাসপাতালও আছে। যারা বাধ্য হয়েই বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। হাসপাতালের অভিযোগ প্রায় ৬ হাজার করোনা রোগীর চিকিৎসা করা হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এখনও পর্যন্ত হাসপাতালকে টাকা মেটায়নি রাজ্য সরকার।
এ তো গেল একদিকের কথা। এর পাশাপাশি রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এখন থেকে নাকি স্বাস্থ্যসাথী বা ওই গোছের কোনো কার্ড না থাকলে চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যাবেনা। স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কার্ড না থাকে সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসাথী ওয়েব পোর্টালে সুবিধাভোগীর আধার নম্বর দিয়ে অনুসন্ধান করতে হবে। ‘‘যদি একজন ব্যক্তির কোনো স্বাস্থ্য কার্ড না থাকে, তাহলে হাসপাতালেই ওই ব্যক্তির শনাক্তকরণ/নতুন কার্ড ইস্যু করার ব্যবস্থা করতে হবে। সমস্ত পিপিপি ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও একই ধরনের ব্যবস্থা রাখা উচিত।’’ শুনতে ভালো পরামর্শর সঙ্গে সঙ্গে একটা প্রশ্নও উঠে আসে। সরকারি হাসপাতালে তো বিনামূল্যে চিকিৎসা হবার কথা। সেখানে স্বাস্থ্যসাথী বা ওই জাতীয় কার্ড বাধ্যতামূলক হবে কেন? যে সাধারণ মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবার যোগ্য তাঁকে কেন বাধ্যতামূলক বিমার সুবিধা নিতে হবে? টাকা রাজ্য, নাকি কেন্দ্র,নাকি বিমা কোম্পানি - কে দিচ্ছে প্রশ্ন সেটা নয় একেবারেই। ‘পশ্ন’ একটাই! তবে কি ঘুরপথে বিনামূল্যে চিকিৎসা ব্যবস্থাটাই তুলে দেবার গোপন খেলা চলছে?
খেলা ৩
গত ৮ অক্টোবর ১৮ হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়ে গেছে এয়ার ইন্ডিয়া। নিলামে মালিকানা পেয়েছে টাটা গোষ্ঠী। DIPAM সচিব তুহিন কান্ত পান্ডে জানিয়েছেন, এই জাতীয় বাহকের বেসরকারিকরণের ফলে সরকারের কোষাগারে জমা হবে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। ১৮ হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে এয়ার ইন্ডিয়ার ১০০ শতাংশ শেয়ারই কিনে নিয়েছে টাটা গোষ্ঠীর অন্তর্গত টাটা সন্স। এর পাশাপাশি এয়ার ইন্ডিয়ার গ্রাউন্ড-হ্যান্ডলিং কোম্পানি AISATS এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ৫০ শতাংশ শেয়ারও পাবে টাটা সন্স। সরকার জানিয়েছে প্রায় ৬১,৫৬২ কোটি টাকা লোকসানে চলছিল এয়ার ইন্ডিয়া। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই এই সংস্থাকে বিক্রি করার চেষ্টা করছিল সরকার। অবশেষে তা সফল হয়েছে। অধিগ্রহণের ফলস্বরূপ, টাটারা এয়ার ইন্ডিয়ার ১০০শতাংশ এবং তার সহযোগী এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ১০০ শতাংশ এবং যৌথ উদ্যোগের এয়ার ইন্ডিয়া স্যাটসের ৫০ শতাংশ মালিকানা পেয়েছে। এছাড়াও পেয়েছে মানব সম্পদের মতো অন্যান্য সম্পদের পাশাপাশি আরও ১৪০টি বিমান ছাড়াও পাবে ৮টি ব্র্যান্ড লোগো।
বিক্রি বাটা সারা হবার পর ২৭ অক্টোবর কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতি জারি করে অবিলম্বে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কাছে এয়ার ইন্ডিয়ার বকেয়া মিটিয়ে দেবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ হস্তান্তরের পরেই ধারে যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে টাটা গোষ্ঠী। এখন থেকে নগদ টাকার বিনিময়েই টিকিট কিনতে হবে। এতদিন যা ধারের খাতায় চলত এবং বেড়েই চলতো বকেয়া। এর আগে বারবার এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে বকেয়া মিটিয়ে দেবার আবেদন জানানো হলেও কেউই সেই দেনা মেটানোর দায় নেননি।
তবে সম্পূর্ণ খেলাটা এখনও শেষ হয়নি। সেকেন্ড হাফ, এক্সট্রা টাইমের খেলা বাকি। ঘোষণা অবশ্য আগস্টেই হয়েছে। যেখানে সরকার জানিয়েছে, আয়োগের তালিকা অনুসারে সরকার মোট ছয় লক্ষ কোটি টাকা দেশের পরিকাঠামো সম্পত্তি বেচে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবছরই আড়াই লক্ষ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। যেসব পরিকাঠামো সম্পত্তি বিক্রি করা হবে, তার দাম ধার্য করা হয়েছে। মোট আটটি মন্ত্রকের অধীনে থাকা এই সম্পদের তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে দেশের ৫০টি রেলস্টেশন এবং ১৫০টি ট্রেন। ১৩টি বিমানবন্দরের সঙ্গে দিল্লি, মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ বিমানবন্দরের সরকারি অংশের শেয়ারও বিক্রি করে দেওয়া হবে। খেলা না হলে এসব খেলা চলবে কী করে!
খেলা ৪
গত বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ২১ অক্টোবর কলকাতায় পেট্রোলের দাম ছিল ১০৭.১১ এবং ডিজেলের দাম ৯৮.৩৮ টাকা প্রতি লিটার। দফায় দফায় বৃদ্ধি চলছে। মাঝখানে ঠিক দু’দিন দু’দিন করে দম নিয়ে আবার পাঁচ দিনের ছোটা। যেমন আজ ২৮ অক্টোবর কলকাতায় লিটার পিছু ৩৩ পয়সা বেড়ে পেট্রোলের দাম ১০৮.৭৮ টাকা এবং লিটার পিছু ৩৬ পয়সা বেড়ে ডিজেলের দাম ১০০.১৪ টাকা। শেষ ৩৪ দিনের মধ্যে ২৬ দিন বেড়েছে ডিজেলের দাম। ২৫ দিনে দিল্লিতে ডিজেলের দাম বেড়েছে লিটারে ৮.৫০ টাকা। শেষ ৩০ দিনের মধ্যে ২৩ দিন বেড়েছে পেট্রোলের দাম। এই ২৩ দিনে পেট্রোলের দামে বৃদ্ধি হয়েছে ৭.১০ টাকা। ২৮ অক্টোবর ২০১৭ তে দিল্লি, কলকাতা, মুম্বাই, চেন্নাইতে লিটার পিছু পেট্রোলের দাম ছিল যথাক্রমে ৬৮.৮৪, ৭১.৬১, ৭৫.৯৫ এবং ৭১.৩৪ টাকা।
পেট্রোল ডিজেলের দাম কেন বাড়ছে, দোষ কার, আন্তর্জাতিক বাজারের দাম - এসব জটিল বিষয়ে আমরা ঢুকব না। তবে একটা ছোটো তথ্য বোধহয় জেনে নেওয়াই যায়। ২০১৪ সালের জুন মাসে দিল্লিতে পেট্রোলের ক্ষেত্রে দাম নির্ধারণ হত যে সূত্রে তা অনেকটা এরকম। ডিলারের দাম ৪৮.৪%, কেন্দ্রীয় কর/এক্সাইজ ডিউটি ১০.৪%, রাজ্যের ট্যাক্স ১২.২% এবং ডিলার্স কমিশন ২%। এবার দেখা যাক জুলাই ২০২১-এ এই বিষয়টা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন ডিলারের দাম ৩৯.৩%, কেন্দ্রীয় কর/এক্সাইজ ডিউটি ৩২.৯%, রাজ্যের ট্যাক্স ২২.৮% এবং ডিলারের কমিশন ৩.৮%। অর্থাৎ মাত্র ৭ বছরে কেন্দ্রীয় কর/এক্সাইজ ডিউটি বাড়ানো হয়েছে ২২.৫% এবং রাজ্যের কর বেড়েছে ১০.৬%। ২০১৪-র মে মাস থেকে ২০১৭-র ডিসেম্বর পর্যন্ত এক্সাইজ ডিউটি বাড়ানো হয়েছে ১২ বার।
যদিও বিজেপি'র তৎকালীন দুই নেতাই এখন প্রয়াত, কিন্তু ২০১২ সালে অরুণ জেটলি এবং সুষমা স্বরাজ পেট্রোল ডিজেলের দাম বেড়ে চলা নিয়ে ইউপিএ-কে কীভাবে তুলোধোনা করেছিলেন তার জন্য একটু বিভিন্ন সংবাদপত্রের আর্কাইভ দেখে নিলেই হবে। আর ২০১২ সালে এই প্রসঙ্গে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং-কে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘সর্দার, কিন্তু যিনি অসরদার নন’। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী সিং প্রধান হলেও কার্যকরী নন। মে ২০১৪-তে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল পিছু ছিল ১১৩ ইউ এস ডলার। জানুয়ারি ২০১৫-তেই তা প্রায় অর্ধেকের বেশি কমে দাঁড়ায় ৫০ ইউ এস ডলার। জানুয়ারি ২০১৬-এ একসময় তা আরও কমে দাঁড়ায় ২৯ ইউ এস ডলার। আন্তর্জাতিক বাজারের দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দাম তো বাড়ে। কমে কি? নাকি সেখানেও সেই খেলা? যদিও নির্বাচনমুখী গোয়ার বিজেপি রাজ্য সম্পাদক-এর বক্তব্যটা না শুনে নিলে খেলার মজাটা পাওয়া যাবে না। যিনি ২৬ অক্টোবর পানাজিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, পেট্রোলের দাম এত বেশি কারণ ভারতকে পেট্রোল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। পেট্রোল টমেটোর মতো নয় যা স্থানীয় ভাবেই উৎপন্ন হয় এবং যদি খুব বেশি উৎপাদন হয় প্রয়োজনে তা বিনা পয়সাতেও দেওয়া যেতে পারে। ‘বিষয়টিকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে। আমরা যে গতিতে এগিয়ে চলেছি এবং যেভাবে উন্নয়নের গতি বাড়ছে তাতে পেট্রোল আগামীদিনে ১০০ টাকা লিটার থাকবে না। এর দাম হয়ে যাবে ২০ টাকা অথবা ১০ টাকা।’
খেলা ৫
খেলার তালিকায় খেলা আছে আরও বেশ কিছু। সেটা ফেক নিউজও হতে পারে আবার ভাবাবেগে আঘাতও হতে পারে। দুই সংস্থার বিজ্ঞাপন নিয়ে আপত্তি উঠেছে কর্ণাটক এবং মধ্যপ্রদেশে। সম্প্রতি এক বিজ্ঞাপনে রাস্তায় বাজি না ফাটানোর অনুরোধ জানানো হয়েছিল। যে বিজ্ঞাপনে অংশ নিয়েছিলেন আমির খান। যে বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে কর্ণাটকের বিজেপি সাংসদ অনন্তকুমার হেগড়ের বক্তব্য, সংস্থার উচিত পরবর্তী বিজ্ঞাপনের সময় হিন্দুদের ভাবাবেগের কথা মনে রাখা এবং তাঁদের ভাবাবেগে আঘাত না করা। তিনি আরও বলেছেন, "কোম্পানির উচিত নামাজের নামে রাস্তা অবরোধ করা এবং আজানের সময় মসজিদ থেকে সৃষ্ট শব্দ দূষণের সমস্যা নিয়েও কথা বলা উচিত।" হেগড়ে বলেন, হিন্দু বিরোধী অভিনেতাদের একটি দল সবসময় হিন্দুদের অনুভূতিতে আঘাত করে। তারা কখনই তাদের সম্প্রদায়ের অন্যায় প্রকাশের চেষ্টা করে না। আর সরকারের সাফল্য প্রচার করতে গিয়ে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি'র রাজ্যসভা সাংসদ প্রকাশ জাভড়েকর যেভাবে আট মাস আগের ভিডিয়োকে বর্তমানের বলে দাবি করেছেন তা নাহয় খেলার অঙ্গ ভেবেই বাদ দেওয়া গেল।
খেলা শেষে
খেলা মেলা উৎসব হচ্ছে। হবে। নিয়ম মেনেই খেলাও হয়তো শেষ হবে। কিন্তু খেলা শেষে? এখনই তো ‘মানুষ বড়ো কাঁদছে...’ ‘মানুষই ফাঁদ পাতছে...’। তাই এখনই বোধহয় মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়ানোর সময়। ‘এসে দাঁড়াও, ভেসে দাঁড়াও এবং ভালোবেসে দাঁড়াও...’।