৬১ বর্ষ ৮ সংখ্যা / ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ / ১১ আশ্বিন, ১৪৩০
অমিত শাহ্’র প্রশ্ন, বিচারপতির প্রশ্ন, রাজ্যের প্রশ্ন
চন্দন দাস
‘সেটিং’ এবং তৃণমূলের চুরির তদন্তগুলি
‘বামপন্থীরা এত বাড়ছে কী করে?’ অমিত শাহ্ জানতে চেয়েছিলেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে।
অভিষেক ব্যানার্জির বাড়ির ঠিকানা, কোনো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ ইডি কেন পেল না? জানতে চেয়েছেন বিচারপতি।
উপরের দুই প্রশ্ন পরস্পর জড়িত। কারণ - রাজ্যের মানুষ জানতে চান কেন তৃণমূলের নেতাদের চুরির কোনো তদন্ত শেষ করছে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি? আরএসএস-র যিনি ‘সাক্ষাৎ দুর্গা’, তাঁর ভাইপো, দলের নেতাদের বিরুদ্ধে নরেন্দ্র মোদির সরকার কেন ব্যবস্থা নিতে চায় না?
অপ্রাসঙ্গিক নয় প্রশ্নটি। সারদা থেকে ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’ - শাস্তি হয়নি তৃণমূল নেতাদের।
রাজ্য সরকারের টাকায় জেলে কাটানো এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে স্পেনে বেড়ানো কুণাল ঘোষের উক্তি কী ছিল? - ‘‘চিট ফান্ডই মমতা ব্যানার্জিকে ২০১১ সালে সরকারে এনেছে। চিট ফান্ড থেকে কেউ যদি সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়ে থাকেন তাহলে তিনি হলেন মমতা ব্যানার্জি।’’ সেই ব্যক্তি আবার দলে ফিরে তৃণমূলের মুখপাত্র এবং অভিষেক ব্যানার্জির ঘনিষ্ঠ হয়েছেন।
২০০৮-’০৯ থেকে সারদা চিটফান্ড সংস্থার সঙ্গে তৃণমূলের ঘনিষ্ঠতা। নন্দীগ্রামে যখন তৃণমূল ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দলের কোনো কর্মসূচি করার ‘অধিকার’ নেই, তখন সেখানে সারদা টাকা তুলতে পেরেছে। কারণ, নিজেদের কবজায় থাকা নন্দীগ্রামে তৃণমূল নেতারা সারদাকে দেদার টাকা তুলতে সাহায্য করেছিল। মমতা ব্যানার্জিকে মুখ্যমন্ত্রী করতে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ঢেলেছিল সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন। রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো সেই পূর্ব মেদিনীপুরেও নিয়োগের নামে দেদার ঘুষের টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে। যে সময়ের অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারী তখন তৃণমূলে। সেই শুভেন্দুর সঙ্গে বিজেপি-র গোপন যোগাযোগ শুরু ২০১৪-তে! তিনি নিজেই মেদিনীপুর শহরে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার দিন সে কথা জানান।
বিজেপি কী ঘাসে মুখ দিয়ে চলে?
মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংস্থাকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোম্পানি হিসাবে রেজিস্ট্রি করিয়েছেন ২০১২-র ১৯ এপ্রিল। তখন সারদার রমরমা।
‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’ এখন দুর্নীতির তদন্তের কেন্দ্রবিন্দু। নেহাতই ‘পরামর্শ’ দেওয়ার ওই সংস্থার সিইও অভিষেক নিজে। যদিও নির্বাচনী হলফনামায় তার কোনো উল্লেখ নেই। সংস্থার দুই ডিরেক্টর অভিষেকের বাবা, মা। বিভিন্ন সংস্থাকে ‘পরামর্শ’ দেন অমিত ব্যানার্জি, লতা ব্যানার্জি। বেদিক ভিলেজ কাণ্ডে জেল খাটা রাজকিশোর মোদি, নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ‘কালীঘাটের কাকু’, অর্থাৎ সুজয় ভদ্ররা অভিষেক ব্যানার্জির এই পারিবারিক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এই ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’-এ কয়লা, গোরু, নিয়োগ দুর্নীতির টাকা ঢুকেছে বলে অভিযোগ।
কিন্তু দু’বার জেরার পরে অভিষেক ব্যানার্জিকে ভাষণ দেওয়ার সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। এছাড়া আর কোনো বিহিত হয়নি। আদালতে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই এবং ইডি-র নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেন্দ্রীয় দুই তদন্তকারী সংস্থাকে ভর্ৎসনা করেছেন বিচারপতিরা। আদালতের নির্দেশে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস এবং তার কর্ণধার ও অন্যান্য ডিরেক্টরদের খতিয়ান জমা দেয় ইডি। সেখানে কী আছে? ইডি জানিয়েছে, তারা অভিষেক ব্যানার্জির কোনো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পায়নি! পায়নি লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের কোনো ঠিকানা। অথচ অভিযুক্ত ওই সংস্থার সিইও মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপোর ২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনের আগে জমা দেওয়া হলফনামাতেই আছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য।
বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ - ইডি, সিবিআই তদন্তের গতি শ্লথ করছে। বিচারপতি অমৃতা সিংহ আদালতে ইডি-র উদ্দেশ্যে বলেছেন,‘‘আপনাদের তদন্তই তো শেষ হবে না।’’
যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছিলেন যে, দুর্নীতিগ্রস্তদের জেলে ভরবেন - সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি। সারদা, নারদ স্টিং অপারেশন থেকে নিয়োগ দুর্নীতি, কয়লা-গোরুর কাটমানির দুর্নীতির তদন্ত চলছে গোরুর গাড়ির গতিতে। একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনায় কোটি কোটি টাকা চুরি করেছে তৃণমূল। ‘শাস্তি’ হয়েছে গরিব গ্রামবাসীদের। তাঁদের প্রাপ্য টাকা বন্ধ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু চোর তৃণমূলীরা বহাল তবিয়তে আছে।
তাই তৃণমূল শাসনে পশ্চিমবঙ্গে ‘সততার অন্তর্জলি যাত্রা’র দায় বিজেপি-র, আরএসএস-র। মমতা ব্যানার্জির দুঃসাহস তাই দুর্নিবার। দুর্নীতির প্রশ্নে তাঁর বক্তব্যগুলি বারবার তাই প্রমাণ করেছে।
‘যা গেছে তা গেছে।’ তিনি বলেছিলেন সারদা চিট ফান্ডে কেলেঙ্কারি প্রসঙ্গে।
‘আগে জানলে প্রার্থী করতাম না।’ নারদ স্টিং অপারেশন জনসমক্ষে আসার পরে, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাদের সম্পর্কে এই কথাই বলতে শোনা গেছিল তাঁকে। যদিও ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের পরে অভিযুক্তদের মন্ত্রী করেছিলেন।
পঞ্চায়েতে তৃণমূলের নেতারা দেদার চুরি করে। তার সাফাইয়ে মুখ্যমন্ত্রী মুখ খুলেছিলেন ২০১৭-র ৩ ফেব্রুয়ারি। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলনের উদ্বোধন করে তিনি বলেন,‘‘শুধু বলবে ও’ চোর ও’ চোর। আরে চুরি করবে না কী করবে? ওদের সুযোগ তো দাও।’’ মুখ্যমন্ত্রী ভাতা বাড়িয়েছেন পঞ্চায়েতের সদস্যদের। চুরি কমেনি। যেমন তিনি দফায় দফায় বিধায়ক, মন্ত্রীদের ভাতা বাড়িয়েছেন। কিন্তু তৃণমূলের দুর্নীতি থামেনি।
যোগ্যদের বঞ্চিত করে ঘুষের বিনিময়ে অন্যদের চাকরি দেওয়ার দুর্নীতি সামনে আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘যদি কেউ অন্যায় করে থাকে সেটা তার দায়িত্ব, সরকার ও দল এর সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত থাকবে না। অযথা আমার গায়ে কালি লাগানোর চেষ্টা করলে, আলকাতরা কিন্তু আমার হাতেও আছে।’’
অর্থাৎ তৃণমূলের দুর্নীতিতে তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন যাঁরা ছুঁড়ছেন, তাঁদের হুমকি।
শিল্পমন্ত্রী তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী গ্রেপ্তার হয়ে গেলেন গত বছর ২২ জুলাই। তার ৭২ ঘণ্টা পরে বিশিষ্টজনদের নিয়ে এক সরকারি অনুষ্ঠানে মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন,‘‘এত টাকা উঠল আমি তো জানব। কোত্থাও থেকে জানতে পারলাম না!’’
তিনি কিছুই জানেন না!
এসএসসি নিয়োগকাণ্ডে নজরদারির জন্য তৈরি কমিটির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হা,এসএসসি’র সচিব অশোক কুমার সাহা, পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, এসএসসি’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে সিবিআই গ্রেপ্তার করেছে। প্রাইমারি টেট কেলেঙ্কারিতে ইডি’র হাতে গ্রেপ্তার তৃণমূলী বিধায়ক, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। এর পরে মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন,‘‘দশটা কাজ করতে গিয়ে একটা ভুল হলে সেই ভুলটাকে আরও বেশি করে দেখানো হচ্ছে। রাইট টু মেক ব্লান্ডার্স, একথা তো নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বলেছিলেন। যে কাজ করে সে ভুলও করে। যে কাজ করে না সে ভুলও করে না।’’
দুর্নীতিকে এইভাবেই প্রশ্রয় দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনেক। অনেকদিন থেকে। ক্ষতিগ্রস্তরা অসংখ্য। দৃষ্টান্ত মনোরঞ্জন মালিক। সিঙ্গুরের বাসিন্দা, রহস্যজনকভাবে মৃত তাপসী মালিকের বাবা। তৃণমূলের কর্মী মনোরঞ্জন মালিক সারদায় টাকা রেখেছিলেন। টাকা ফেরত পাননি। সেই সারদা চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির তদন্ত ১০ বছরে শেষ হয়নি!
১৪০ জনের বেশি এজেন্ট, আমানতকারী আত্মঘাতী হলেন। কয়েক লক্ষ পরিবার সর্বস্বান্ত হলেন। ‘চিট ফান্ডের টাকা ফেরত দাও’ - তৃণমূল কংগ্রেস একবারও বলতে পারেনি। কারণ - সে কথা বললেই মমতা ব্যানার্জির ছবি বিক্রি করে পাওয়া ২ কোটি টাকা ফেরতের প্রশ্ন চলে আসবে।
২০১১-র বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রকাশ হয় ‘চেকমুড়ি রহস্য।’ তৃণমূলের অসংখ্য পোড়া, ফেলে দেওয়া বিলের সন্ধান মেলে। অভিযোগ ওঠে রহস্যময় উৎস থেকে তৃণমূল টাকা পেয়েছে। যা প্রকাশ করা যায় না বলেই তার বদলে বিল কেটে তা নষ্ট করা হয়েছে। ২০১১-র বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টকে হারাতে প্রচুর বেআইনি টাকা সংগ্রহ করেছিল মমতা ব্যানার্জির দল।
সেই বিধানসভা নির্বাচনে আরএসএস মমতা ব্যানার্জিকে সাহায্য করেছিলেন জিততে। তা তারা স্বীকারও করে। রাজ্যে তৃণমূলের এই দুর্নীতি-রাজ গড়ে তুলতে আরএসএস, বিজেপি’র সহযোগিতা আছে।
২০১১-র মে-তে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসলেন মমতা ব্যানার্জি। দুর্নীতি হয়েছিল গমের বীজ নিয়ে, তৃণমূল সরকারের ৩ মাসের মাথায়। ৭কোটি টাকার কেলেঙ্কারি করে কৃষকদের যে প্রতারণা করেছিল সরকার, তা মহাকরণে স্বীকার করতে বাধ্য হন তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। শিলিগুড়ি -জলপাইগুড়ি উন্নয়ন পর্ষদে বড়ো মাপের দুর্নীতি ধরা পড়েছিল। তার তদন্ত সঠিকভাবে করার ‘অপরাধে’ সরতে হয়েছিল শিলিগুড়ির তৎকালীন পুলিশ কমিশনার কে জয়রামনকে।
পাঞ্জাবে লোকসভা ভোটের আগে পতাকা কিনতে নাকি তৃণমূলের খরচ হয়েছিল ২কোটি টাকা - ২০১৩-’১৪ সালে। অথচ সেই হিসাব সংশ্লিষ্ট বছরে তৃণমূলের আয় ব্যয়ের রিপোর্টে ছিল না। ২০১২-র ৭ ফেব্রুয়ারি হরিয়ানার পাঁচকুলায় একটি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা হয় ‘সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস’র নামে। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি - ১৩ দিনের মধ্যে কয়েক দফায় ওই অ্যাকাউন্টে নগদে ৮৮ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা জমা পড়ে। কে সেই টাকা জমা দিল? গুরুতর প্রশ্ন উঠেছিল - ফেব্রুয়ারিতে অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা জমা নেওয়া হলে ২০১১-১২’র সালের আয় ব্যয়ের রিপোর্ট সেই অ্যাকাউন্টের অস্তিত্ব থাকল না কেন?
১২ বছর কেটে গেছে তাঁর মুখ্যমন্ত্রীত্বের। মমতা ব্যানার্জির পরিবারের সম্পত্তি এখন কেমন?
হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট থেকে হরিশ মুখার্জি রোড, কালীঘাট রোড এখন এক পরিবারের একচেটিয়া দখলদারি। অভিযোগ উঠেছে। জবাব? পাওয়া যায়নি। দুটি রাস্তা জুড়ে ৩৫টি প্লট শুধু নয়, রয়েছে কালীঘাট চত্বরের বাইরেও একাধিক সম্পত্তি, নির্দিষ্ট ওই ব্যানার্জি পরিবারেরই। এখন দেখা যাচ্ছে বোলপুরে কৃষিজমিও প্রচুর টাকায় কিনে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রীর এক ভাই এবং তাঁর স্ত্রী কাজরী ব্যানার্জি। মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেকের বিরাট বাড়ি হরিশ মুখার্জি স্ট্রিটে - ‘শান্তিনিকেতন।’
নারদ স্টিং অপারেশনে যাঁরা অভিযুক্ত সেই ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখার্জি, শুভেন্দু অধিকারী, সৌগত রায়, অপরূপা পোদ্দার সহ ১২জনের কেউ মন্ত্রী থেকেছেন, কেউ সাংসদ। মমতা ব্যানার্জিই করেছেন। সেই কেলেঙ্কারির তদন্ত আজও শেষ করেনি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
গোরু পাচারের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু তারপর? বিনয় মিশ্রকে ২০১৯-র ২৩ জুলাই অভিষেক ব্যানার্জি যুব তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক করেন। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতুর নাগরিকত্ব নিয়ে ফেলেছেন কয়লা পাচার চক্রের এই অন্যতম পান্ডা বিনয় মিশ্র। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর দক্ষিণ কলকাতায় তাঁর ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। অথচ তার আগে ২২ ডিসেম্বরই তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব ছাড়ার জন্য পাসপোর্টও জমা দিয়ে দিয়েছিলেন। সিবিআই, ভারতের গোয়েন্দারা জানতেই পারলেন না এমন একটি লোক দেশ ছেড়ে অন্য দেশের নাগরিক হয়ে গেল?
গোরু-কয়লা পাচার - দুটি কারবারের টাকার এক বড়ো অংশ একাধিক ভুয়ো সংস্থায় প্রথমে জমা হয়েছে। তারপর তা পৌঁছেছে সিঙ্গাপুরের ভাইপো সাংসদের স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে, শ্যালিকার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও। অভিযোগ এমনই।
যুব তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কুন্তল ঘোষ। আপাতত জেলবন্দি। শিক্ষক নিয়োগের নামে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। ২০১৪ থেকে তার এই ‘উপার্জন’ শুরু। নিয়োগকাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়েছেন তৃণমূলের বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহা এবং ‘কালীঘাটের কাকু।’ সুজয় ভদ্র হলেন কালীঘাটের কাকু’। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জির ঘনিষ্ঠ। ভদ্র ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর ডিরেক্টর হয়েছিলেন। দু’বছরের বেশি সময় ধরে ডিরেক্টর ছিলেন। যে ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেড’-র সিইও তিনি, অভিষেক। কিন্তু নির্বাচনী হলফনামায় তার কোনো উল্লেখ নেই।
ভারতের শক্তিশালী তদন্তকারী সংস্থাগুলি কিছুই জানত না? আরএসএস, বিজেপি এত দুর্বল?