৫৮ বর্ষ ৩৭ সংখ্যা / ৩০ এপ্রিল, ২০২১ / ১৬ বৈশাখ, ১৪২৮
সরকারি অবহেলা এবং উদাসীনতার জেরে রাজ্যে ভয়াবহ কোভিড পরিস্থিতি
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ করোনা পরিস্থিতি সামলাতে তৃণমূল সরকারের দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপের জেরে রাজ্যের মানুষ চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হয়েছেন। চিকিৎসার প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিকল্পনাহীনতার ছাপ স্পষ্ট। পশ্চিমবঙ্গে সরকারি তথ্য অনুযায়ী কোভিড আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যার সঙ্গে মিলছে না বিভিন্ন স্তরের বিশেষজ্ঞ এবং পর্যবেক্ষকদের অভিজ্ঞতা। স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইট কোভিড চিকিৎসার খালি শয্যার যে হিসেব দেখাচ্ছে তা যথাযথ নয়, ভুয়ো উঠছে এমন অভিযোগ। টিকার লাইনে সর্বত্র প্রবল ভিড় এবং টিকাদানের ধীরগতি সংক্রমণের বিস্তৃতিকে কার্যত প্রসারিত করছে - এমনটাই এ রাজ্যের মানুষ বলছেন ক্ষোভের সঙ্গে।
রাজ্যের তথ্য অনুযায়ী, ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলায় আক্রান্ত ৭ লক্ষ ৯৩ হাজার ৫৫২ জন। যেখানে গত ২৪ ঘন্টায় (২৮ এপ্রিল) আক্রান্ত হয়েছেন ১৭,২০৭ জন এবং মৃত ৭৭ জন। যদিও ধাপায় শেষকৃত্যের অপেক্ষায় জমা হওয়া মৃতদেহের স্তুপ ও অন্যান্য শ্মশানে দাহের প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিজ্ঞতা এবং কোমরবিডিটি’র সংযুক্ত তালিকাকেও পেছনে ফেলছে বলে উঠেছে জোরালো অভিযোগ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাজ্যজুড়ে রেমডিসেভার সহ অন্যান্য ওষুধের চূড়ান্ত কালোবাজারি।
টিকা নিয়েও মানুষের হয়রানির শেষ নেই। রাজ্যে ভোররাতে লাইন দিয়েও মিলছে না করোনার টিকা। ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। অক্সিজেনের কৃত্রিম অভাবজনিত কারণে ৭-৮ গুন দামে বিক্রি হচ্ছে অক্সিজেন সিলিন্ডার। প্রশাসনের কোনো হেলদোল নেই। মুখ্যমন্ত্রী টিকাকরণের ক্ষেত্রে বিনামূল্যে দেওয়ার কথা এবং অন্যান্য প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেও তা থেকে সরে আসছেন বলে বিরোধীদের অভিমত।
আবার রাজ্য সরকারের হেল্পলাইনে কাকুতি-মিনতি করেও অসুস্থ প্রিয়জনকে হাসপাতলে ভর্তি করার সুযোগ পাচ্ছেন না রাজ্যের মানুষ। ওয়েবসাইটে ‘বেড পাওয়া যাচ্ছে’ এ কথা লেখা থাকলেও সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা করুণ। ফোন করলেই জানা যাচ্ছে ওই বেড ইতিমধ্যেই ভর্তি হয়ে গেছে। বেসরকারি হাসপাতালেও কমবেশি অবস্থাটা একই রকম। করোনায় মৃতদেহ পড়ে থাকছে বিভিন্ন জায়গায়। যদিও মুখ্যমন্ত্রী সহ তার পার্ষদরা প্রতিদিনই ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখাচ্ছেন বেড বাড়ানোর অঙ্ক। কিন্তু প্রকৃত পরিস্থিতি ভিন্ন। সরকার বা সরকারি দলগুলি পাশে না থাকলেও এই পরিস্থিতিতে বামপন্থীরা এবং রেড ভলেন্টিয়ার গ্রুপ মানুষের প্রয়োজনে তার পাশে দাঁড়াচ্ছেন। পৌঁছে দিচ্ছেন খাবার, ওষুধ থেকে অক্সিজেন সবকিছুই। জীবনের ঝুকি নিয়ে পৌঁছে দিচ্ছেন হাসপাতালে।