E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ২০ সংখ্যা / ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ / ১৪ পৌষ, ১৪২৯

কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ষড়যন্ত্রে গভীর সংকটে আইসিডিএস প্রকল্প এবং কর্মী ও সহায়িকারা

শঙ্কর মুখার্জি


বারাসতে জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে আইসিডিএস কর্মী-সহায়িকাদের বিক্ষোভ।

আর্থিক ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে-পড়া গর্ভবতী ও প্রসূতি মা এবং ছয় বছরের কম বয়সী শিশুদের ‘সিক্স প্যাকেজ অব সার্ভিসেস’ অর্থাৎ ছটি পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই সূচনা হয়েছিল আইসিডিএস প্রকল্প। যার সম্পূর্ণ নাম ‘ইন্ট্রিগ্রেটেড চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস’ প্রকল্প। এই পরিষেবাগুলি হলোঃ পরিপূরক পুষ্টি, প্রাক-প্রাথমিক অপ্রথাগত শিক্ষা, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যশিক্ষা, প্রতিষেধক প্রদান, স্থাস্থ্যপরীক্ষা এবং রেফারেল সার্ভিস। এই বহুমুখী প্রকল্পের পথচলা শুরু ১৯৭৫ সালের ২ জুন। প্রসঙ্গত, যে কেন্দ্র থেকে আইসিডিএস’র কাজ পরিচালিত হয় তারই নামই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। আর এই কাজে নিযুক্তরাই হলেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা।

গত সাড়ে চার দশকের বেশি সময় অতিক্রম করা এই সর্বভারতীয় প্রকল্পের সাফল্যের কাহিনি বিস্তর। গর্ভবতী ও প্রসূতি মা এবং শিশুদের বিকাশ ও সেবা প্রদানে আজ পৃথিবীর বৃহত্তম প্রকল্পে পরিণত হয়েছে আইসিডিএস। পালস পোলিও কর্মসূচিতে এই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদেরই নিয়োগ করা হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে দেশে শুরু হয় পালস পোলিও কর্মসূচি। দেশকে পোলিও মুক্ত করতে গত ২৭ বছর ধরে এ এক মহাকাব্যিক দায়িত্ব পালন করে চলেছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকারা।

কেন্দ্রীয় সরকারের চরম ঔদাসীন্য ও অবহেলায় স্বাধীন ভারতের এই ঐতিহ্যশালী প্রকল্প আজ গভীর সংকটে। আক্রমণের মুখোমুখি কর্মী-সহায়িকারাও। কেন্দ্রীয় সরকার এঁদের শ্রমিক হিসেবেও স্বীকৃতি দেয় না। তাই তাঁরা শ্রমআইনের আওতায় আসেন না। মহিলা ও শিশু বিকাশ মন্ত্রকের অধীনে আইসিডিএস প্রকল্প হলেও, পরিপূরক পুষ্টি, নতুন কেন্দ্র চালু করা এবং কর্মী-সহায়িকাদের সাম্মানিক প্রদানে আংশিক দায়িত্ব রাজ্যসরকারগুলিরও। এ দায়িত্ব সম্পূর্ণ পালনে একেবারেই অনিচ্ছুক এ রাজ্যের তৃণমূল সরকার। এই সরকার আইসিডিএস প্রকল্পের গুরুত্বকে বিভিন্নভাবে খর্ব করার পথ নিয়েছে। গত ১১ বছরে এ রাজ্যে একটাও নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র খোলা হয় নি। অবসর নেওয়া কর্মী-সহায়িকাদের স্থানে নতুন নিয়োগ প্রায় একেবারেই বন্ধ। এটা সর্বজনবিদিত যে, মেলা-উৎসব সংঘটনে-উপঢৌকন বিতরণে অর্থের অভাব হয় না রাজ্য সরকারের। অর্থ বরাদ্দে সরকারের অক্ষমতা শুধু আইসিডিএস’র মতো সামাজিক কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিতে।



অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিকে অচল করে দিতে এক অন্য পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। এমনিতেই প্রকল্পগুলিতে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহায়িকার ঘাটতি রয়েছে। এখন প্রকল্পগুলিকে সচল রাখতে সরকারের জরুরি কাজ হওয়া উচিত নতুন কর্মী-সহায়িকা নিয়োগ। তা না’করে কর্মী-সহায়িকাদের অন্য সরকারি কাজে বাধ্যতামূলকভাবে যুক্ত করা হচ্ছে। এখন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহায়িকাদের কেন্দ্র পরিচালনা ছাড়াও দুয়ারে সরকার, আবাস যোজনা, অর্থনৈতিক সমীক্ষার মতো একাধিক কাজ করতে হয়। আবাস যোজনার সমীক্ষার কাজ করতে গিয়ে তাঁদের আবার তৃণমূলী দুর্বৃত্তদের রোষের মুখেও পড়তে হচ্ছে।

এর বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে আন্দোলনে নেমেছে সিআইটিইউ। গত ২৩ ডিসেম্বর নারী, শিশুকল্যাণ ও সমাজকল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রীকে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। ডেপুটেশনে বলা হয়েছেঃ “এই কাজ করার ক্ষেত্রে তারা নানান অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো রাজনৈতিক চাপ। শাসকদলের নেতারা কার্যত ঠিক করে দিচ্ছে কাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। তাদের পরামর্শ মতো কাজ না করলে নানান ধরনের হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এমনকী চাকরি থেকে বরখাস্ত করে দেবার ও প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। আবাস যোজনায় ঘর দেওয়া নিয়ে যে বিপুল দুর্নীতি হয়েছে এই কমীদের বলপূর্বক তার দায় নিতে বাধ্য করা হচ্ছে।”

ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আইসিডিএস কর্মীদের ওপর খুন-আক্রমণের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। গত ১৩ ডিসেম্বর শাসকদলের চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন স্বরূপনগরের আইসিডিএস কর্মী রেবা বিশ্বাস। ১৭ ডিসেম্বর কালনায় আইসিডিএস কর্মী অনুসুরা বিবির বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আইসিডিএস এবং আাশা কর্মীদের মারধরের ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদেও।

সিআইটিইউ’র পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীর কাছে দাবি করা হয়েছেঃ
১) আইসিডিএস এবং আশাকর্মীদের নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সমীক্ষার কাজ করানো যাবে না।
২) এই কাজ করতে গিয়ে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের অথবা তাঁদের পরিবারকে অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৩) সমস্ত আক্রমণ ও হুমকি প্রদানকারীদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।



অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা কেন্দ্র পরিচালনা করতে গিয়ে তাঁদের যে নানারকম প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তার আলোচনাও এসময়ে খুবই জরুরি। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিচালনার জন্য সর্বক্ষেত্রে বিরাজ করছে পাহাড়প্রমাণ সম্যসা। কর্মী ও সহায়িকা নিয়োগ যে প্রায় একেবারেই বন্ধ তা আগেই বলা হয়েছে। সামান্য যে কিছু নিয়োগ হয়েছে তাতেও চলেছে তৃণমূলীদের স্বজনপোষণ। কিছু কিছু প্রোজেক্টে কর্মী স্বল্পতা চরম জায়গায় পৌঁছেছে। আইসিডিএস প্রকল্পে একটি প্রোজেক্টের মধ্যে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি থাকে।প্রতি কেন্দ্রে একজন কর্মী ও একজন সহায়িকা অর্থাৎ মোট দুজন করে থাকার কথা। কিন্তু বহু প্রোজেক্টেই তা নেই। যেমন, বরানগর প্রজেক্টে ১৬৯ টা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে মোট ৩৩৮ জন কর্মী-সহায়িকা থাকার কথা, কিন্তু রয়েছে কর্মী-সহায়িকা মিলে ২৮৮ জন। অর্থাৎ ঘাটতি ৫০। এরাজ্যে প্রথম আইসিডিএস প্রোজেক্ট খিদিরপুরে। সেখানে কেন্দ্র সংখ্যা ১৭৬টি। কর্মী-সহায়িকার সংখ্যা হওয়া উচিত মোট ৩৫২। কিন্তু আছে মাত্র ২২০ জন। অর্থাৎ এক্ষেত্রে ঘাটতি আরও বেশি, ১৩২ জন। এরকম অসংখ্য উদাহরণ সারা রাজ্যে ছড়িয়ে আছে। একের অধিক কেন্দ্র দেখার জন্য মাসে মাত্র ৫০ টাকা অতিরিক্ত পায় কর্মী ও সহায়িকারা।

আমরা সবাই জানি যে, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি থেকে তৈরি করা খাবার মা-শিশুদের দেওয়া হয়। এই খাবার তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় চাল, ডাল, সবজি, ডিম, জ্বালানি সরবরাহে সরকারের দায়িত্বশীল ভূমিকাই চোখে পড়ে না। এটা রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। চাল,ডাল, তেল, নুন সরকার সরাসরি সরবরাহ করে। ডিম এবং জ্বালানি কর্মী-সহায়িকারা নিজেরা পয়সা দিয়ে কেনেন। মাসের শেষে তাঁরা সারা মাসের খরচের বিল এবং রিপোর্ট জমা দিলে তবেই টাকা মেলে। এই রিপোর্ট জমা পড়ায় দেরি হলে কর্মী ও সহায়িকাদের সাম্মানিকও বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাঁরা সরকারের থেকে যে মাসিক সাম্মানিক পান তার একটা অংশ এই ডিম, সবজি ও জ্বালানি কেনার জন্য বিনিয়োগ করতেই হয়। না হলে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালানোই দুষ্কর হয়ে পড়বে। অন্যদিকে, যে চাল-ডাল সরকার সরাসরি দেয় সেগুলির গুণমান প্রায়শই নিম্নমানের হয়। এরজন্য মাঝেমধ্যেই উপভোক্তাদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহায়িকাদের। কিন্তু এক্ষেত্রে তাঁদের কিছু করণীয় থাকে না।

আবার ডিম কিংবা জ্বালানির জন্য যে টাকা সরকার বরাদ্দ করে তা এতোই যৎসামান্য তা দিয়ে ন্যূনতম প্রয়োজনীয় জিনিস কেনাও সম্ভব হয় না। একটা উদাহরণ দিলেই বিষয়টা স্পষ্ট হবে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রপিছু জ্বালানি বাবদ বরাদ্দের পরিমাণ সর্বনিম্ন দৈনিক ১৮ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২৩ টাকা। উপভোক্তার সংখ্যা অনুযায়ী এটা ঠিক হয়। যদি কেন্দ্রপিছু ১০০-র অধিক উপভোক্তা থাকে তবেই বরাদ্দ হয় দৈনিক ২৩ টাকা। না হলে দৈনিক ১৮ কিংবা ২১ টাকা। জ্বালানি হিসেবে কেরোসিন তেল ব্যবহার করা হয়। যদি ধরেও নেওয়া হয় দৈনিক ২৩ টাকা পাওয়া যাচ্ছে, তা হলেও কি ওই টাকায় ১০০ জনের রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি কেনা সম্ভব? যেখানে খোলাবাজারে কেরোসিন তেলের দাম লিটারপিছু ১১০ টাকা। এই সব মিলিয়ে আইসিডিএস প্রকল্পে বরাদ্দ হয় দৈনিক মাত্র বাচ্চাদের জন্য ৭ টাকা, মা’দের জন্য ৮ টাকা এবং অপুষ্ট বাচ্চাদের জন্য ৯ টাকা। এই যৎসামান্য বরাদ্দে কি খাবার দেওয়া সম্ভব, তা অনুমান করাই যায়। - যেদিন ভাত হয় সেদিন গোটা ডিম; আর খিচুড়ি হলে অর্ধেক ডিম। বহু ক্ষেত্রেই নিজেদের গাঁটের কড়ি খরচা করেই কেন্দ্র চালাতে হয় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহায়িকাদের। এই ত্যাগ স্বীকার করা সত্ত্বেও তাঁদেরই মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় রাজ্য সরকারের অপদার্থতার কারণে।

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির রাজ্যের অংশ দেখার দায়িত্ব নারী, শিশুকল্যাণ ও সমাজকল্যাণ দপ্তরের। যার মন্ত্রী শশী পাঁজা। এই দপ্তরেও রয়েছে কর্মীর স্বল্পতা। যেমন কলকাতা সহ শহরাঞ্চলে ২৫টা এবং গ্রামাঞ্চলে ২০টা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রপিছু একজন করে সুপারভাইজার থাকার কথা। এঁরা হচ্ছেন রাজ্য সরকারের কর্মচারী। রাজ্যের বহু অঙ্গনওয়াড়ি প্রোজেক্টে যে সংখ্যক সুপারভাইজার থাকার কথা তা নেই। যেমন, মথুরাপুর-২ প্রোজেক্টে ৪১০টি সেন্টার এবং বাগবাজার প্রোজেক্টে ১০৫টা কেন্দ্রের জন্য মাত্র ১জন সুপারভাইজার। এরকম ছবি প্রায় রাজ্যের সর্বত্র আর এর বেশি থাকবেই বা কেমন করে। গত ১১ বছরে সুপারভাইজার পদে সরকার কোনো নিয়োগই করেনি।



এতো দায়িত্ব পালনের সাথে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহায়িকাদের নতুন এক দায়িত্ব চাপিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তারা ‘প্রোসান ট্রাকার’ নামে এক অ্যপের ব্যবস্থা করেছে। যে অ্যাপে কেন্দ্রপিছু রিপোর্ট দৈনিক আপলোড করতে হবে। এবং তা করতে হবে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের। এরজন্য প্রয়োজন স্মার্ট ফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ। অনেকের কাছেই স্মার্ট ফোন নেই। গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যা বিস্তর। এই ইন্টারনেট সংযোগের জন্য মাসিক ব্যয় কিংবা স্মার্ট ফোন কেনার অর্থ কিছুই দেয় না কেন্দ্রীয় সরকার। আবার রিপোর্ট ঠিকমতো জমা না পড়লে খাঁড়া নেমে আসতে পারে কেন্দ্রের ওপর।

এমনিতেই কর্মী-সহায়িকার স্বল্পতা, বহু কর্মী বা সহায়িকার ওপর একের বেশি কেন্দ্রের দায়িত্ব, রাজ্য সরকারের অন্যান্য কাজে নিয়োগ, তারপর এই প্রোসান ট্রাকার অ্যাপে আপলোড করার বাড়তি বোঝা। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের ওপর এসব যেন এক মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের সমতুল্য।



১৯৭৫ সালের ২ জুন যখন আইসিডিএস প্রকল্প শুরু হলো তখন সারা দেশে ৩৩টি প্রোজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছিল। যারমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ছিল দুটি, পুরুলিয়ার মানবাজারে এবং কলকাতার খিদিরপুরে। ১৯৭৭ সালে বামফ্রন্ট সরকার যখন ক্ষমতায় এলো তখন রাজ্যে মাত্র ২৮টি প্রোজেক্ট। তারপরই সরকারের উদ্যোগে পাহাড় থেকে সমুদ্র - সারা রাজ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ৪১৬ টা প্রোজেক্টে লক্ষাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি হয়। লক্ষ-কোটি মা-শিশুর কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় পরিষেবা। উন্নতি ঘটে পরিষেবার গুণমানেরও। আর এরসাথে যেটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ তা হলো, লক্ষ লক্ষ মহিলার সামান্য কিছু আয়ের একটা স্থায়ী ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়। তাঁদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। সেই সব গঠনমূলক ভাবনা-চিন্তার আজ আর কোনো অস্তিত্বই নেই। কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারই ধারাবাহিকভাবে এই খাতে বরাদ্দ কমিয়ে চলেছে। প্রচেষ্টা চলছে এনজিও’কে দিয়ে এই প্রকল্প চালানোরও। আসলে উভয় সরকারেরই লক্ষ্য একটা - ক্রমশ গুরুত্ব খর্ব করে আইসিডিএস প্রকল্পকে সংকুচিত করা।