E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

৬০ বর্ষ ২০ সংখ্যা / ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ / ১৪ পৌষ, ১৪২৯

বিকল্প ধারার কাজ

যাদবপুর জ্যোতিদেবী শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ১০০০ দিন পূর্তি


কেউ খাবে আর কেউ খাবে না,
তা হবে না, তা হবে না!


লড়াইয়ের এমন স্পষ্ট অঙ্গীকারকে সঙ্গী করে অন্য ধারার আন্দোলনের রূপরেখাকে প্রতিষ্ঠা করল যাদবপুর জ্যোতিদেবী শ্রমজীবী ক্যান্টিন। ভ্যানে করে রান্না করা দুপুরের খাবার বিতরণের আপাত অনিশ্চয়তা টপকে পায়ে পায়ে পেরিয়ে গেলো ১০০০ দিন। লকডাউনের সময় যা শুরু হয়েছিল তা এখন এক বিশাল কর্মকাণ্ড। ইতিমধ্যেই ক্যান্টিনের গণ্ডি পেরিয়ে তৈরি হয়েছে যাদবপুর শ্রমজীবী ট্রাস্ট।

অপদার্থ দেশচালকদের অপরিকল্পিত লকডাউনে যাদবপুর এলাকায় ২০২০-তে চাঁদা তুলে অনেকগুলো ছোটো ছোটো রান্নাঘর শুরু করা হয়েছিল, যেখান থেকে মানুষকে বিনামূল্যে খাবার বিতরণ করা হতো। সেই রান্নাঘরগুলোকে ক্রমে একত্র করে এক ছাতার নিচে এনে শ্রমজীবী ক্যান্টিন তৈরি করা হয় একটি নির্দিষ্ট অনুদানের বিনিময়ে এক বেলা খাবার দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে। শুরুতে একবেলা ন্যূনতম ২০ টাকা অনুদানের বিনিময়ে খাবার পাওয়া যেত। আর এখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে তা বেড়ে ২৫টাকা হয়েছে।

শোষণের মাধ্যমে উপার্জিত অর্থের ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ ‘সমাজসেবা’ বা ‘দান ধ্যানে’ ব্যয় করে সামাজিক নাম আর ‘পূণ্য’ কিনতে চায় কায়েমি স্বার্থ। বিপরীতে, বামপন্থীরা মনে করে পুষ্টিকর খাদ্য মানুষের অধিকার, সেটা নিশ্চিত করবার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। সেই দায়িত্ব যদি রাষ্ট্র না পালন করে, তাহলে মানুষকে সংগঠিতভাবে সেই অধিকার কেড়ে নিতে হবে। চেতনার সেই স্তরে পৌছনোর মধ্যবর্তী পর্বে নিজেদের সীমিত আর্থিক শক্তি দিয়েই তারা নিজেদের চাহিদা মেটানোর খোঁজ থেকেই ন্যূনতম মূল্যে খাবারের জন্য এই যাদবপুর জ্যোতিদেবী শ্রমজীবী ক্যান্টিন রূপায়ণ। এখানে মানুষকে কোনরকম দান গ্রহণের ক্ষিণ্ণতার মধ্যে আবদ্ধ করা হয় না। এখানে প্রান্তিক সহ বিভিন্ন অংশের মানুষ নিজের পয়সার বিনিময়ে মাথা উঁচু করে নিজের খাবারটুকু গ্রহণ করছেন, শামিল হয়ে যাচ্ছেন বড়ো লড়াইয়ের প্রস্তুতিতে।

২৫ টাকায় এক বেলার খাবার কীভাবে সম্ভব হচ্ছে? তার উত্তর রয়েছে উদ্যোক্তাদের কাছে। ওরা বলছেন, সম্ভব। বলছেন ধরুন, দুই বন্ধু দুটো আলাদা বাড়িতে একা থাকেন, রান্না করে খান। যদি তাঁরা রান্নাঘরকে জুড়ে একসাথে করে নেন, তাহলে দুজনের রান্নার খরচা কমে যাবে। এইভাবে যতজনকে একসাথে জুড়তে থাকবেন, রান্নার খরচা তত কমতে থাকবে। অর্থাৎ মানুষ যত একসাথে জোটবদ্ধ হবে, যত বেশি করে যৌথযাপনের চর্চা করবে, তত বেশি করে তার আর্থিক ক্ষমতায়ন হবে, তত সহজে সে নিজের চাহিদা মেটাতে পারবে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব - শুধু খাদ্য নয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, সব ক্ষেত্রে। তারা সেটা করে না। আমরা আমাদের সীমিত ক্ষমতায় একটা অঞ্চলে খুব ক্ষুদ্র একটা প্রজেক্টের মাধ্যমে এই যৌথতার চর্চা পরীক্ষা করতে চাই।

অন্যদের অনুদানের প্রশ্নে ওঁদের বক্তব্য, এই ক্যান্টিন শুরু করতে সরঞ্জাম বা পরিকাঠামোগত একটা বড়ো খরচা হয়েছে এবং আগামীদিনেও হবে। তার পুরোটাই সাধারণ মানুষের অনুদান থেকেই এসেছে এবং আসবে। বহু মানুষ তাদের সামাজিক অনুষ্ঠান যেমন জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, শ্রাদ্ধ ইত্যাদি পালন করতে চান এই ক্যান্টিনের মাধ্যমে - তখ‍‍ন তাদের অনুদান ব্যবহার করেই রোজকার মেনুর বাইরেও সকলের জন্যে মাছ, মাংস, মিষ্টির ব্যবস্থা করা হয়। নির্ধারিত ন্যূনতম মূল্যে নো প্রফিট নো লসে খাবার দিতে গেলে যে নির্দিষ্ট সংখ্যা এবং পরিকাঠামোয় পৌছতে হবে, তার জন্যে খানিকটা সময় লাগবে। অগুনতি সাধারণ মানুষের অল্প অল্প করে দেওয়া অর্থেই বলীয়ান হয়ে এগিয়ে চলেছে এই বিকল্প ক্যান্টিন। এর পাশাপাশি এখনও বেশ কিছু মানুষকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে খাবার দিতে হয়, তাদের ন্যূনতম মূল্য দেওয়ার মতনও আর্থিক সংগতি নেই, সেই খরচাটাও আসে এই অনুদান থেকে। আবার সেই যৌথতার চর্চা।

ক্যান্টিনে আসেন রিকশাচালক, নির্মাণ শ্রমিক, এটিএমের রক্ষী, যিনি অফিসের চাকুরে, আইটি কর্মচারী, ডাক্তার, উকিল, গৃহবধু, গৃহশ্রমিক, শিল্পী - এরা সকলেই শ্রমজীবী, এবং এই ক্যান্টিন এদের সকলের জন্যে উন্মুক্ত। কারণ, যত বেশি মানুষ যুক্ত হবেন, তত শক্তিশালী হবে যৌথতার চর্চা। সেই ‘ইকনমি অফ স্কেল’ মেনে এই রান্নাঘর তত সুষ্ঠভাবে চালানো যাবে। এই কারণেই খাবারের প্যাকেটের ওপর ‘দাম’ নয়, লেখা থাকে ‘ন্যূনতম সহায়ক মূল্য’। বেশ কিছু মানুষ খাবার নেওয়ার সময় ৫০,১০০ টাকা দেন। অনেক সময় কেউ কেউ যারা দৈনন্দিন ২৫টাকা দিয়ে খাবার নেন, তারাই কোনো একদিন একটু বেশি টাকা দিয়ে দেন।

এই ক্যান্টিন পরিচালনার প্রতিদিনের কাজে ৯ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। আগামীদিনে যত কর্মকাণ্ডের পরিধি বাড়বে, আরও কিছু লোক বাড়াতে হবে। কর্মীদের মাইনের অংশটাও আসে ওই ২৫ টাকার নূন্যতম মূল্যের মধ্যে থেকেই। অর্থাৎ শুধু খাদ্যের চাহিদা পূরণ করা নয়, খুব অল্প সংখ্যায় হলেও অঞ্চলের কিছু লোকের কর্মসংস্থানের চাহিদা মেটাতে পারা গেছে।

ক্যান্টিন পরিচালনা ছাড়াও এই ট্রাস্টের তত্বাবধানে শুরু হয়েছে বিকল্প স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শুরু হতে চলেছে লাইব্রেরি আর বিকল্প পাঠশালা।

বিকল্প প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র বিদ্যাসাগর অবৈতনিক কোচিং সেন্টার

উত্তর ২৪ পরগনার উত্তর দমদম পৌরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিআই(এম)’র উদ্যোগে ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে বিকল্প প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র বিদ্যাসাগর অবৈতনিক কোচিং সেন্টার। অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমজীবী মানুষের প্রান্তিক পরিবারগুলির শিশুদের প্রাথমিক অক্ষর জ্ঞানের পর্যায়ে সাহায্য করতে শুরু হয়েছে নিমতা দক্ষিণ এরিয়া কমিটির এই উদ্যোগ। ওইদিন থেকে প্রায় পঞ্চাশ জন কচিকাঁচা শিখতে শুরু করেছে অ’য় অজগর থেকে এবিসিডি। প্রতিদিন বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধে সাড়ে ছটা সাতটা পর্যন্ত এই ক্লাস চলে। পড়াশোনার পাশাপাশি সুষম পুষ্টিকর আহার তুলে দেওয়া হচ্ছে তাদের মুখে। প্রতিদিন নিয়ম করে ডিম, দুধ, ফল থেকে হরলিক্স দেওয়া হচ্ছে। ২০ নভেম্বর এই বিকল্প প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য এবং রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পলাশ দাশ।

৩১ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রনগর, পূর্ব আলিপুর, দত্তপাড়া প্রভৃতি এলাকা থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় প্রান্তিক পরিবারের অভিভাবকরা কমিউনিটি সেন্টারে জড়ো হচ্ছেন ছেলেমেয়েদের হাত ধরে। এই সেন্টারের বহু শিশু যারা দিনের বেলায় আইসিডিএস প্রকল্পের কর্মীদের কাছে থাকেন, সন্ধ্যাবেলায় তাদের সুস্থ সংস্কৃতি সম্পন্ন পরিবেশে বেড়ে ওঠার সুযোগকে দুহাতে আঁকড়ে ধরেছেন ছোট্ট রাই কাঁসারি, অদিতি মণ্ডল, অনুষ্কা দাসদের অভিভাবকরা।

শ্রেণি দায়বদ্ধতার ছাপও যে লেগে রয়েছে এই উদ্যোগের পরোক্ষে। কারা বা কোন পরিবার থেকে এই শিক্ষা কেন্দ্রের শিশুরা আসছে? কামারহাটি পুরসভা এবং উত্তর দমদম পৌরসভার সীমানা এলাকায় অবস্থিত এই ৩১ নম্বর ওয়ার্ড। এখানে রয়েছে বিস্তীর্ণ বস্তি অঞ্চল। বাবা-মা রিক্সাচালক, ভ্যানচালক থেকে গৃহ সহায়িকার কাজ করেন এমন সব পরিবার - এককথায় অসংগঠিত শ্রমজীবী পরিবারের ছেলেমেয়েরা আসে এখানে। এলাকার অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন প্রবীণ মানুষ শিক্ষক হিসেবে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন এই বিকল্প উদ্যোগে। শিশুদের পুষ্টির জন্য দেওয়া খাবারের ডিমের খোসা ছাড়ানো, এমনকি ফল কেটে দেওয়ার কাজটিও করছেন শিশুদের পরিবারের অভিভাবক-অভিভাবিকারা হাসিমুখেই।

মাসে একদিন রয়েছে খুদেদের মেডিকেল চেকআপের ব্যবস্থা। শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে কিনা, তার কোনো অসুস্থতা আছে কিনা তা দেখা হয়।এলাকার সংবেদনশীল চিকিৎসকরা মাসে একদিন এই চেকআপ করতে আসেন কোনও পারিশ্রমিক ছাড়াই। মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয় এই শিশুদের চিকিৎসার সুবিধা দিতে।

গড়ে প্রতিদিন এখানে খরচের পরিমাণ প্রায় শ’ পাঁচেক টাকা। বামপন্থী আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল শুধু নয় বহু সাধারণ মানুষও এই অবৈতনিক শিক্ষা কেন্দ্র চালানোর আর্থিক দায় বহন করছেন হাসিমুখে। শুধু পড়াশোনা নয়, এখানে আঁকাও শিখছে ছোটোরা। তার পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষার প্রাথমিক পাঠ দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন মনীষীদের ছবি চেনানো এবং তাঁদের জন্মদিন পালনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে। এই কর্মসূচির বার্তায় উৎসাহের সঙ্গে অংশগ্রহণ করছেন এমনকি খুদেদের অভিভাবকরাও। খাবারের ছোটো বাসন থেকে লেখাপড়ার স্লেট সহ নানা প্রয়োজনীয় জিনিস বহু মানুষ নিজ উদ্যোগে পৌঁছে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষের হাতে।

এই কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সংবেদনশীল মানুষ অবহিত। তাদের ব্যক্তিগত উপলব্ধি থেকে পরিবারের শুভ অনুষ্ঠানের আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছেন এই প্রান্তিক পরিবারের শিশুদের সঙ্গে। উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে নিয়ে আসছেন খাবার। শুধু অবস্থাপন্ন পরিবার নয়, তুলনায় কম আয়ের সাধারণ পরিবারের মানুষরাও এই সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রসারিত রূপটিকে প্রতিষ্ঠা করার দায় তুলে নিয়েছেন। নিজের এলাকায় এমন অবৈতনিক শিক্ষা কেন্দ্র এবং বিকল্প উদ্যোগ কীভাবে গড়ে তোলা যায় তার হাল হকিকত খতিয়ে দেখতে পার্টির দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে আসছেন বিভিন্ন অংশের বামপন্থী মানুষ এবং সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

আগামী বছর থেকে আবৃত্তি, গান, নাচ সহ বিভিন্ন সুকুমার প্রবৃত্তির চর্চা এবং অনুশীলন কেন্দ্র হিসেবে এই শিক্ষাকেন্দ্রকে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন পার্টি নেতৃত্ব। এই ধরনের শিক্ষাকেন্দ্রের চাহিদা বাড়ছে আশেপাশের ওয়ার্ডগুলিতেও। অভিভাবকরা তাদের শিশুদের হাত ধরে পৌঁছে যাচ্ছেন পার্টি নেতৃত্বের কাছে এই সুবিধা প্রসারিত করার আবদার নিয়ে। প্রান্তিক পরিবারগুলির একটাই দাবি, এই সেন্টার যেন বন্ধ না হয়।

নদীয়া জেলার পিআরসি ইউনিট

রাজ্যের দূরবর্তী জেলাগুলিতে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা কার্যত বিপর্যস্ত। তৃণমূল জমানায় পরিকাঠামোহীন নীল-সাদা রঙ করা বাড়ি ছাড়া হয় নি কিছুই। বামফ্রন্ট সরকারের সময়ের বিকেন্দ্রীকৃত স্বাস্থ্যব্যবস্থার সফল মডেল ছুঁড়ে ফেলে কার্যকর করা হয়েছে পিপিপি-র মতো বাণিজ্যিক ফিকির আর সুপার স্পেশালিটির নামে ভাওতাবাজি। সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি এবং হাসপাতালে অপ্রতুল ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী। সরকারি হাসপাতালের ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানে ডাক্তারি প্রেসক্রিপশন মতো ওষুধ পাওয়া যায় না। দালাল চক্র রাজত্ব কায়েম করেছে। শুধু তাই নয়, কোভিডের সময় মানুষ দেখেছেন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা সদর্থক নয়।

এই পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের পাশে নদীয়া জেলার বেশ কয়েকটি সংগঠন মানুষকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ধারাবাহিক সহায়তা দিয়ে চলেছে। যেমন এই জেলার পিপলস রিলিফ সোসাইটি (পিআরসি)। সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যে ঐতিহ্যবাহী পিআরসি ইউনিট সারা বছর মানুষকে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করে। এই পরিষেবা শুধুমাত্র শহরকেন্দ্রিক এমন নয়। জেলা শহর কৃষ্ণনগর, করিমপুর থেকে হরিণঘাটা সর্বত্রই পিআরসি কর্মীরা মানুষের পাশে থেকে সহায়তা করে চলেছে। জেলার বড়ো বড়ো সামাজিক উৎসবগুলিতে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে হাজির থাকে পিআরসি ইউনিট। এই ঐতিহ্যবাহী সামাজিক দায়বদ্ধ সংগঠনের কর্মীরা অনলসভাবে স্বেচ্ছাশ্রম দেন। এই পরিষেবা দেওয়া হয় বিনামূল্যে। ডাক্তারবাবুরাও কোনোরকম ফিজ নেন না।

গত কয়েক বছরে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ নদীয়া জেলায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগ নজরে আসেনা। পিআরসি’র কর্মীরাই আক্রান্ত মানুষকে শুধু সহায়তা প্রদান করেন তাই নয়, নদীয়ার প্রত্যন্ত গ্রামে গ্রামে নিয়মিত এ বিষয়ে সচেতনতা শিবির করে পিআরসি।

কোভিডের সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পিআরসি কর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। অক্সিজেন নিয়ে যখন কালোবাজারি চলছিল তখন মানুষকে নায্যমূল্যে অক্সিজেন বাড়ি বাড়িতে গিয়ে পৌঁছে দিয়েছেন তাঁরা।

নদীয়া জেলার শান্তিপুর কৃত্তিবাস জনকল্যাণ কেন্দ্র গত কয়েকবছর ধরে দুঃস্থ মানুষের পাশে থেকে কাজ করছে। গরিব ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে বই বিতরণ, দুঃস্থ মানুষদের বস্ত্র বিতরণ ছাড়াও নানা সময়ে চিকিৎসা প্রদান করে।