৫৮ বর্ষ ৫০ সংখ্যা / ৩০ জুলাই, ২০২১ / ১৩ শ্রাবণ, ১৪২৮
কান নিয়ে গেছে চিলে
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়
‘চিলে কান নিয়ে গেছে’ কথাটা চিরকাল আশপাশ থেকেই ভেসে আসে। উড়ে আসে। জেঠু, কাকু, মাসি, পিসি, দাদা, দিদি, উপকারীজনেরা এসব কথা হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন। এই ধরনের ঘটনায় সবার আগে চিলচিৎকার দিয়ে চেল্লামিল্লি জুড়ে চিলের পেছন পেছন ছুটে যাওয়াই দস্তুর। কানটা কানে, নাকি হাঁটুতে, অথবা চিলের ঠোঁটে তা বুঝে, শুনে সিদ্ধান্ত নেবার আগেই ‘বাধাহীন গণ্ডিহীন, মুক্তির উল্লাসে’ ‘তাজা তরুণ রক্ত’ তখন মেতে ওঠে। ‘পরে কি হইবে, তাহা ভাবিবার অবসর কোথায়?’ কানের খোঁজে বঙ্কা, পঞ্চার প্রাণপণ দৌড় দেখে জেঠু, কাকুর দল মুচকি হেসে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে পরবর্তী চিল কাহিনির তত্ত্বতালাশ করতে শুরু করেন। প্রোপাগান্ডা বলতে পারা যায়, অথবা ‘পোপাগান্ডা’ - শিকারি এবং শিকার - এ বড়োই মধুর সম্পর্ক। রিয়েলিটি ঘুরে ফিরে সেই সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট-এ এসে থেমে যায়।
ইদানীং মনে হচ্ছে সংবিধানের ১৯তম অনুচ্ছেদ আমাদের যতটা না বাকস্বাধীনতা দিতে পেরেছে, তার চেয়ে ঢের বেশি দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। ফেসবুক, ট্যুইটার, হ্যানা ত্যানা - আরও যে সব মালপত্তর বাজারে আছে। নিজেকে উগরে দেবার এত ভালো টুলস এর আগে কখনও দেখা যায়নি। বোকাবাক্সর দৌলতে ১০ বাই ১০-এ মানুষকে আটকে ফেলার পর যাবতীয় বোধ-বুদ্ধি-ভাবনা-চিন্তা-অনুভূতি-আবেগ সব এখন হাতের তালুতে আটকা। আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপে একটু আঙুল ঘষে দিলেই অবদমিত মনের কথায় মেঘভাঙা বৃষ্টি। সব ভাসিয়ে দেওয়া। চিলে কান নিয়ে গেছে শোনার পর গেল গেল রব তুলে কানে হাত দিয়ে দেখার আগেই মতামতের রামধনু নিয়ে খাপ পঞ্চায়েত এখন বেশ চালু অভ্যাস। কান ফিরলে কীভাবে তাকে আবার কানের জায়গায় বসানো হবে অথবা কানটাকে হাত দিয়ে ঢেকে রাখা উচিত ছিল, কিংবা আরও কতবার চিলে আমাদের কান নিয়ে যাবে বা চিলের কাছে যাওয়াই উচিত হয়নি গোছের আলোচনা। মোক্ষলাভ এই পথে সুনিশ্চিত। অতএব চরৈবেতি।
পেছনের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে পেছনে যাওয়াটা গত কয়েক বছরে আমরা বেশ রপ্ত করে ফেলেছি। এখন আর বিশেষ কিছু মালুম হয় না। চাকরির পরীক্ষা না হলেও হয়না। সরকারি সংস্থা বেচেবুচে খেয়ে নিলেও হয়না। বেশ একটা নির্বিকল্প সমাধি গোছের অনুভূতিতে আচ্ছন্নভাব। কাজেই আমিও নাহয় লেখার স্বার্থে একটু পেছনের দিকে এগিয়ে যাই। তাতে এমন কিছু যাবে আসবে না।
২০১৮ সাল। ২২ সেপ্টেম্বর। রাজস্থানের কোটা। ততদিনে উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির গদি উলটে বিজেপি ক্ষমতায়। সামনে রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচন। দেশের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তখন বিজেপি সভাপতি। কোটা-য় সোশ্যাল মিডিয়া কর্মীদের এক সভায় তিনি বলেছিলেন - ‘‘উত্তরপ্রদেশে পার্টির সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে ৩২লাখ সদস্য রয়েছে। আমরা চাইলেই যে কোনো খবর জনতার কাছে পৌঁছে দিতে পারি, তা সে ভুল খবর হোক বা ঠিক খবর।’’ এরপরেই তিনি বেশ গর্ব করে জানিয়েছিলেন - উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনের আগে আমাদের দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের এক সদস্য একটা মিথ্যা খবর একদিন ছড়িয়ে দেয়। সে লেখে - অখিলেশ যাদব মুলায়ম সিং যাদবকে চড় মেরেছে। আসলে সত্যি করে মারেনি। কারণ অখিলেশ এবং মুলায়ম দুজনে ৬০০ কিলোমিটার দূরে ছিল। কিন্তু ওই বিজেপি কর্মী এই বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়।... আমরা যা চাই তাই মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারি। তা টক হোক বা মিষ্টি, সত্যি হোক কিংবা মিথ্যা। আমাদের কাছে ৩২ লাখ মানুষের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছিল। তাই এই কাজ সম্ভব হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছিলেন - খবর ঠিক হোক বা ভুল হোক সেটা বিষয় নয়। সেটাকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াটাই বিষয়।
এত পুরোনো কথা টেনে না আনলেও হতো। কিন্তু স্মৃতি যেহেতু খুবই বিশ্বাসঘাতক তাই মাঝে মাঝে একটু ঝালিয়ে নেওয়া ভালো। এ কথা বলার কারণ অন্য। গতকালই উত্তরপ্রদেশে প্রায় একই রকমের আরও একটা ঘটনা ঘটেছে। এবারও সেই অখিলেশ যাদবের নামে। যদিও সমাজবাদী পার্টি কোনো রাজনৈতিক দলের নাম না করেই গৌতমপল্লি থানায় অভিযোগ জানিয়েছে। সমাজবাদী পার্টির অভিযোগ, এক ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে অখিলেশ যাদবের নামে ভুয়ো ট্যুইট ছড়িয়ে দেওয়া হয়। যে ট্যুইটে দাবি করা হয়, অখিলেশ যাদব বলেছেন, তিনি ক্ষমতায় এলে বাবরি মসজিদ পুনরায় তৈরি করে দেবেন। এরপরেই বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে এই ট্যুইট ছড়িয়ে পড়ে। ওই ‘ভাইরাল’ করা যেটাকে বলে। ঠিক, ভুল, নীতি, আদর্শ জলাঞ্জলি দিয়ে একথা স্বীকার করতেই হবে - ‘পোপাগান্ডা করতি জানতি হয়।’ ইস্যু ‘ফিসফ্রাই’ও হতে পারে অথবা ‘বিরোধী জোট’। মর্কটীয় মার্কেটে ছড়িয়ে দেবার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া তো আছেই। তারপরেই কানে টান আর চিলের পেছনে দৌড়।
২০২৪-এর এখনও ঢের দেরি। লোকসভা নির্বাচনেরও। সেই নির্বাচনে কে জিতবেন, কে প্রধানমন্ত্রী হবেন তা এখনও গোলোকধাঁধা। তবে কাঁঠাল গাছ লাগানো হয়ে গেছে। এখনও তাতে কাঁঠাল ধরেনি। যদিও পেট্রোল ডিজেল থেকে শুরু করে রান্নার - সব তেলের দাম বাড়া নিয়ে কেউ রা না কাড়লেও গোঁফে তেল দিয়ে অনেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ‘পথ’ ‘রথ’ ‘মূর্তি’ সবাই আপাতত নিজ নিজ ভাবনায় ‘দেব’। শেষ যে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল তাতে সব রাজ্যেই বিজেপি-কে আটকাতে বিরোধিতা হয়েছে। এই প্রবল বিরোধিতার জেরে বাম শাসিত কেরালায় বিজেপি এক থেকে শূন্য হয়ে গেছে। তামিলনাড়ুতে ৪। আসামে বিজেপি’র আসন বাড়েনি বা কমেনি। আগেরবারের মতোই ৬০ আসনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে। পুদুচেরিতে ৬ আসন। আর ‘পোবোল’ বিজেপি বিরোধিতা করে এই রাজ্যে বিজেপি-কে ৩ থেকে বাড়িয়ে ৭৭-এ আটকে দিয়ে এখন ‘এ দিল মাঙ্গে মোর’। কে কাকে আটকাল আর কে কাকে এগিয়ে দিল সেই হিসেব বোঝার জন্য কাক্কেশ্বর কুচকুচের শরণ নেবার কোনো দরকার পড়বে না।
মুই বিরোধী তুই বিরোধী টুকি টুকি এই খেলা এখন চলবে। হয়তো আগামী ২০২৪ পর্যন্তই। এর আগে কোমরে দড়ি পরানোর নাটক হয়েছে। এবার হয়তো অন্য কিছু হবে। মিডিয়াও ধেই ধেই করে সেই খবর প্রচার করে পরে গোপন মিটিং-এর খবর করতে বেমালুম ভুলে যাবে। অথবা ফ্রন্ট পেজে জায়গা না পেয়ে ৯-এর পাতার শেষ কলামের একদম নিচে দশলাইন বরাদ্দ হবে। আমরাও মাথা নেড়ে বলব - ঠিক ঠিক। গুরুত্বপূর্ণ খবর হলে তো প্রথম পাতায় ছাপত। কে কোথায় কোন্ কাগজে লিখল তা নিয়ে তড়িঘড়ি খবর করা চালু মিডিয়া যেমন বেমালুম ভুলে যায় সংসদের কিছুটা দূরেই হওয়া প্রতিবাদী কিষান সংসদের খবর করতে। ২০২১ সালে ৬৩টা ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট বন্ধ হয়ে গেছে সে খবর করতে। গত ২০১৪-১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ইঞ্জিনিয়ারিং-এ প্রায় সাড়ে আট লাখ সিট কমেছে সে খবর করতে। যাকগে সেসব ফালতু (!) কথা। কাজের কথায় ফিরি।
গতকাল, অর্থাৎ ২৮ জুলাই দিল্লিতে বিরোধীদের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। যে বৈঠকের আলোচ্য ছিল পেগাসাস নজরদারি, কৃষক আন্দোলন, আসাম মিজোরাম সীমান্ত সংঘর্ষ সহ আরও বেশ কিছু বিষয়। সংসদে এই সব প্রশ্নে কীভাবে বিরোধীরা আলোচনার দাবি তুলবে, কীভাবে মুলতবি প্রস্তাব আনা হবে তা নিয়ে। যে বৈঠক শেষে বিরোধীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে - “মুদ্রাস্ফীতি থেকে শুরু করে পেগাসাস বা কৃষকদের সমস্যা, কোনোটাকেই খাটো করে দেখতে রাজি নই। আমরা এইসব বিষয়ে সংসদে আলোচনা চাই"। ১৪ দলের এই বৈঠকে কংগ্রেস, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি, শিবসেনা, সিপিআই, সিপিআই(এম), আরএসপি, আরজেডি, ডিএমকে, সমাজবাদী পার্টি, আম আদমি পার্টি, আইইউএমএল, ন্যাশনাল কনফারেন্স, ভিসিকে, কেসিএম উপস্থিত থাকলেও নজরকাড়া অনুপস্থিতি অবশ্যই দেশের স্বঘোষিত প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল-এর! যদিও ঘটনাচক্রে তৃণমূল সুপ্রিমো দিল্লিতেই ছিলেন। এর আগের দিনই তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে এই বৈঠকে কেন তৃণমূলের কোনো প্রতিনিধি ছিলনা তা স্পষ্ট নয়। নেই কোনো বিবৃতিও। কেন? সে প্রশ্ন আমাকে কোরো না।
একদিকে স্বঘোষিত বাবাদের মতো স্বঘোষিত বিরোধী আর অন্যদিকে মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়। এই দুয়ের মাঝে নতুন ট্রেন্ড ‘আমি রাজনীতি বুঝি না। সব বিষয় নিয়ে রাজনীতি করবেন না’ অথবা ‘আমি অরাজনৈতিক’ ‘দেশের কথা বলি’। নাহয় তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া গেল এর সবগুলোই ঠিক। কিন্তু কোন্টা রাজনীতি আর কোন্টা রাজনীতি না, মানে কতটা পর্যন্ত গেলে অরাজনীতি থাকে আর কোথায় ঢুকে পড়লে রাজনীতির চৌকাঠে পা রাখা হয় তা বোঝাই খুব জটিল কাণ্ড।
যেমন ধরা যাক, আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার বা আইএমএফ ৪ মাস আগে জানিয়েছিল ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ১২.৫ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটতে পারে। সম্প্রতি তারা জানিয়েছে এই বৃদ্ধি ৯.৫ শতাংশর বেশি হবার সম্ভাবনা কম। ভারতে করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ-এর ধাক্কায় ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি আশানুরূপ হবে না বলেও আইএমএফ-এর ওই কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। অর্থনীতিবিদদের মতে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৩ শতাংশ কমা নজিরবিহীন। এই বিষয়ে কিছু বলা মানে রাজনীতি কিনা কে জানে?
আবার ধরা যাক লোকসভায় ২৫ জুলাই কেন্দ্রীয় কর্পোরেট প্রতিমন্ত্রী ইন্দরজিত সিং জানিয়েছেন ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত ভারতে ১৬,৫২৭টি কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে। এমসিএ পোর্টালের তথ্য অনুসারে, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ৪ লক্ষ ৩৭৫টি কোম্পানি লাভের মধ্যে চলছিল, আর লোকসানে চলছিল ৪ লক্ষ ২ হাজার ৪৩১ টি কোম্পানি। এইসব বন্ধ হওয়া কোম্পানির শ্রমিকরা কোথায় গেলেন অথবা ক্রমশ এগিয়ে যাওয়ার, আচ্ছে দিন আসার এটাই পূর্বাভাস কিনা সেই প্রশ্ন রাজনীতি অথবা অরাজনীতি কোন্ শ্রেণিতে পড়বে?
রাজনীতি বনাম অরাজনীতির দ্বন্দ্ব চুলোয় যাক। এখন বরং একটু রাজনীতিই করা যাক। গত ২৭ জুলাই এক ট্যুইট বার্তায় সীতারাম ইয়েচুরি জানান - দেশে ক্রমশ বেকারির হার বাড়ছে। গত ২৫ জুলাই শেষ হওয়া সপ্তাহের হিসেব অনুসারে ৫.৯৮ শতাংশ থেকে তা পৌঁছে গেছে ৭.১৪ শতাংশে। গ্রামীণ ভারতে এই বৃদ্ধির হার আরও উদ্বেগজনক। ৫.১ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৬.৭৫ শতাংশ। ২৮ জুলাই এক ট্যুইটে ইয়েচুরি জানান - বেকারির হার বৃদ্ধির পাশাপাশি দ্রুত গতিতে কমছে মজুরি। এটাই ভারতের আসল ছবি। যদিও মোদি এখনও মানুষের হাতে সরাসরি টাকা এবং অভাবীদের বিনামূল্যে খাবার দিতে রাজি নন। অপরাধী ব্যক্তি। সাধারণ মানুষকে এখনই ত্রাণ দিতে হবে।
পুরো বিষয়টাই গোলমেলে ঠেকছে তো! আসলে গোলমেলে কিছুই নয়। সবটাই ঠিক। এগুলোই চারপাশে ঘটছে। রবীন্দ্রনাথ তো কবেই লিখে গেছেন - ‘ধ্বনিটিরে প্রতিধ্বনি সদা ব্যঙ্গ করে - ধ্বনি-কাছে ঋণী সে যে পাছে ধরা পড়ে।’ প্রতিধ্বনিকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বড়ো করে দেখাতে গেলে ধ্বনিকে ছোটো করতেই হবে। এই গোলযোগ যত বাড়বে বিভ্রান্তি ততই বাড়িয়ে তোলা যাবে। আশেপাশে যত ‘খেলা হবে’ ‘খেলা হবে’ বলে চিৎকার সেই সব খেলার ওপরে মূল খেলা বিভ্রান্তি বাড়ানোর। চারদিক থেকে সাঁড়াশি আক্রমণের মাঝে চিলের কান নিয়ে যাওয়ার গল্প খেলার অনুষঙ্গ মাত্র। তাই শেষ করি ‘তাঁর’ উদ্ধৃতি দিয়েই - ‘দেহটা যেমনি ক'রে ঘোরাও যেখানে/বাম হাত বামে থাকে, ডান হাত ডানে।’
____________________
পেছনের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে পেছনে যাওয়াটা গত কয়েক বছরে আমরা বেশ রপ্ত করে ফেলেছি। এখন আর বিশেষ কিছু মালুম হয় না। চাকরির পরীক্ষা না হলেও হয়না। সরকারি সংস্থা বেচেবুচে খেয়ে নিলেও হয়না। বেশ একটা নির্বিকল্প সমাধি গোছের অনুভূতিতে আচ্ছন্নভাব। কাজেই আমিও নাহয় লেখার স্বার্থে একটু পেছনের দিকে এগিয়ে যাই। তাতে এমন কিছু যাবে আসবে না।