৬০ বর্ষ ৪৬ সংখ্যা / ৩০ জুন, ২০২৩ / ১৪ আষাঢ়, ১৪৩০
জয় ছিনিয়ে আনার লক্ষ্যকে পাখির চোখ করতে হবে
মৃণাল চক্রবর্তী
দোরগোড়ায় পঞ্চায়েত নির্বাচন। প্রচার প্রস্তুতির সময় এক সপ্তাহও আর হাতে নেই। ভারতীয় সংবিধানের ২৪৩ নং ধারা অনুযায়ী এই নির্বাচন ঘোষণা বাধ্যতামূলক থাকলেও শাসকদলের পক্ষ থেকে টালবাহানা চলছিল। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে ব্যাপক দুর্নীতির রথচক্র চালাতে গিয়ে প্রায় কুড়ি বাইশজন তৃণমূলের নেতা মন্ত্রী জেলে। মাথার কাছাকাছি পৌঁছালেও কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি অহেতুক মাথা পর্যন্ত পৌঁছাতে কার্যত বিলম্ব করছে। এর বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ আছড়ে পড়েছে শহরের রাজপথ থেকে গ্রামের আলপথে। গোটা রাজ্য তোলপাড় হয়েছিল ‘চোর ধরো জেল ভরো স্লোগানে’। সে কারণে তৃণমূল বেশ খানিকটা বেসামাল। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে চূড়ান্ত অনীহা লক্ষ করা গেছে বর্তমান রাজ্যের শাসকদলের। শুধু আদালতের রায়ে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর চাপেই নয়, বিভিন্ন স্তরে আন্দোলন এবং সংগ্রামের কারণে সাম্প্রতিক উপনির্বাচনগুলোতেও তাদের জনভিত্তিও ক্রমশ হ্রাস পেয়েছে। সেটাও এই অনীহার অন্যতম আর একটি কারণ। তাই অযথা সংশয় তৈরির অপচেষ্টা চলছিল পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশে। একইভাবে, বিজেপি’র পক্ষ থেকেও আদালতে মামলা করে নানাভাবে এই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার চেষ্টা পরিলক্ষিত হয়েছে। যে কোনো সময়ে নির্বাচন হতে পারে ধরে নিয়ে সিপিআই(এম)’র পক্ষ থেকেও সাংগঠনিক প্রচার প্রস্তুতি গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। যা শুরু হয় বিগত পার্টি কংগ্রেসের পর থেকেই।
অশোকনগর বাঁশপুল পঞ্চায়েতের ৪২ নং ও ৪৫ নং বুথের প্রার্থী-সহ পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের প্রার্থীকে নিয়ে প্রচার অভিযান।
সাধারণ মানুষের রুটিরুজি, জীবনজীবিকার দাবির সাথে সাথে গণতান্ত্রিক অধিকারের উপর আক্রমণ, কেন্দ্র এবং রাজ্যের জনবিরোধী নীতি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর আক্রমণ সহ অন্যান্য অধিকারের উপরে আক্রমণের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন ও লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মানুষের আন্দোলনের শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছিল। নভেম্বর মাসব্যাপি ‘গ্রাম জাগাও, চোর তাড়াও’, ‘লুটেরাদের হটিয়ে মানুষের পঞ্চায়েত গড়ে তোলো’ - এই স্লোগানের ভিত্তিতে পার্টির গণফ্রন্টগুলিকে সামনে রেখে কৃষকের ফসলের ন্যায্য দাম, খেতমজুরের বছরে ২০০ দিনের কাজ ও দৈনিক ৬০০টাকা মজুরির দাবিতে এবং স্থানীয় পঞ্চায়েতের দুর্নীতি, স্বজনপোষণ ও তোলাবাজির ঘটনা চিহ্নিত করে গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি বুথকে ছুঁয়ে দীর্ঘ পদযাত্রা ও পদযাত্রা শেষে একই দাবিতে গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা কেলেঙ্কারি সামনে আসে। পরবর্তী ধাপে ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি মাস জুড়ে বঞ্চিত প্রকৃত উপভোক্তাদের নাম তালিকাভুক্ত করতে আবেদন সহ তাদের সহ সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ব্লক অভিযান শুরু হয়। পরে এই অভিযানের ঢেউ আছড়ে পড়ে জেলাপরিষদগুলিতে।
সরকার উঠে পড়ে লাগে মানুষের ক্রমবর্ধমান এই আন্দোলনের শক্তিকে দুর্বল করতে। পুলিশ এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রেফতার করা, মিথ্যা মামলা সহ অগণতান্ত্রিক দমনপীড়নের পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। সে সবে ভয় না পেয়ে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের জেদ বৃদ্ধি পায় এবং এ হেন দমনপীড়নের বিরুদ্ধে বড়ো বড়ো মিছিল সমাবেশে আরও বেশি বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করে। বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী নেমে পড়েন তার দোসর আরএসএস-কে সঙ্গে নিয়ে। একদিকে যখন রামনবমীকে সামনে রেখে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বৃদ্ধি করে দাঙ্গার পরিবেশ তৈরি করতে উঠে পড়ে লাগে আরএসএস, তখন অন্যদিকে ১০০দিনের কাজের বকেয়া টাকার দাবিতে এবং আবাস যোজনার টাকা বরাদ্দ করার দাবিতে ময়দানে সপার্ষদ ধর্নায় বসেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এক শ্রেণির মিডিয়া তারাও উঠে পড়ে লাগে দুর্বল হয়ে পড়া বাইনারিকে পুনরায় শক্তিশালী করার কাজে।
মানুষের আন্দোলনের শক্তিকে দুর্বল করে মেরুকরণের রাজনীতি ও বাইনারি-কে শক্তিশালী করার মিলিত চক্রান্তের মোকাবিলায় রুটি রুজি, জীবনজীবিকা ও হকের দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলনের শক্তি যাতে দুর্বল না হয় তার জন্য জেলায় জেলায় ব্যাপক বিকেন্দ্রীভুত রাজনৈতিক প্রচারের শেষে বড়ো বড়ো সমাবেশের কর্মসূচি নেওয়া হয় মে এবং জুন মাসের শুরুতে। তীব্র দাবদাহকে উপেক্ষা করে এই পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য, ‘‘বারাসতে কাছারি ময়দানে আয়োজিত লক্ষাধিক মানুষের জেদি সমাবেশ’’। এই সমাবেশকে বানচাল করতে সরকার এবং রাজ্যের শাসকদল উঠে পড়ে লাগে। শেষ পর্যন্ত কলকাতা উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপে সমস্ত প্রশাসনিক চক্রান্ত রুখে দিয়ে ঐতিহাসিক সমাবেশ সংগঠিত হয়।
সিপিআই(এম)’র পক্ষ থেকে প্রথম থেকেই অবিলম্বে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছিল। স্লোগান দেওয়া হয় ‘‘চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, চ্যালেঞ্জ নাও, পঞ্চায়েতের তারিখ দাও’’ - এই স্লোগান ক্রমশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। এহেন প্রেক্ষাপটে শাসকশ্রেণি বুঝতে পারে যে, সময় পেলে বামপন্থীদের নেতৃত্বে তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী শক্তি আরও সংহত রূপ নিতে পারে। এই ভাবনার ভিত্তিতে নির্বাচন হওয়া না হওয়াকে কেন্দ্র করে একটা সংশয়াচ্ছন্ন পরিবেশের মধ্যে আচমকা সম্পূর্ণ প্রস্তুতিবিহীন অবস্থায় পঞ্চায়েতের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দেয়। যেদিন নির্বাচনী নির্ঘণ্ট বিজ্ঞাপিত হয় সেদিন থেকেই মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ শুরু হয়। শুরুতেই রাজ্যজুড়ে বিডিও অফিসগুলি মনোনয়নপত্র সরবরাহ করতে না পারার ব্যর্থতার চিত্র ভেসে ওঠে। চরম অবস্থা দেখা দেয়, যা কীনা বামফ্রন্ট সরকারের সময়কালে নজীরবিহীন - এই চিত্র কোনদিনই দেখা যায়নি।
রাজ্যে ৬৩ হাজার ২২৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন, ৯ হাজার ৭৩০টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন এবং ৯২৮টি জেলা পরিষদ আসন। ত্রিস্তরে মোট ৭৩হাজার ৮৮৭টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় দেওয়া হয়েছিল পরিষ্কার ৬ দিন দৈনিক ৪-ঘণ্টা হিসাবে মাত্র ২৪ ঘণ্টা । স্ক্রুটিনি এবং মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য বিস্ময়জনকভাবে কমিশনের পক্ষে সময় বরাদ্দ করা হয় ৪দিন এবং দৈনিক ৪ ঘন্টা ঘণ্টা হিসাবে ১৬ ঘণ্টা। এর থেকেই স্পষ্ট হয়েছিল, এই সরকার কমিশনকে ব্যবহার করে ২০১৮ সালের মতো এবারেও নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করতে চায়। এই সরকার তার আমলে ২০১৩ সালে প্রথম পঞায়েত নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করতে উদ্যোগী হয়েছিল। তৎকালীন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পান্ডের চারিত্রিক দৃঢ়তা এবং নির্বাচন কমিশনের স্বতন্ত্র ভূমিকা রক্ষায় বলিষ্ঠ পদক্ষেপের কারণে আংশিক অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সংগঠিত হয়। নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগকে ভন্ডুল করতে সেবারও সুপ্রিম কোর্টে ছুটেছিল সরকার। এবারেও কমিশন তার দলদাস হলেও মামলাকারীদের আবেদনের ভিত্তিতে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে কলকাতা উচ্চ আদালত হস্তক্ষেপ করে এবং সেই অনুযায়ী কমিশনকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। কলকাতা উচ্চ আদালতের এই হস্তক্ষেপ আটকাতে কমিশনকে দোসর করে সর্বোচ্চ আদালতে যায় নির্লজ্জ রাজ্য সরকার। কিন্তু তাদের অপপ্রয়াস ব্যর্থ হয়। এসব থেকে প্রমাণ হয় তৃণমূল কংগ্রেসের ভূমিকা ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের নীতি অনুযায়ী গঠিত ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এবং কেন্দ্রীয়করণের পক্ষে। কোনো রাজনৈতিক সদিচ্ছা থেকে নয়, শুধুমাত্র সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে অনিচ্ছা সত্ত্বেও নির্বাচনের নামে এই প্রহসন করছে তারা। কো-অপারেটিভ, স্কুলের পরিচালন কমিটি, কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদ, প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানগুলির গঠনে বামফ্রন্ট আমলে যে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা চালু ছিল তা এই সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। তেমনি সুযোগ থাকলে পঞ্চায়েত নির্বাচন বন্ধ করে পঞ্চায়েতি ব্যবস্থার পরিবর্তে অতীতের আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করত।
নির্বাচন ঘোষণার সময় বিরোধীরা অপ্রস্তুত থাকবে। এই ধারণা থেকে তৃণমূল মনে করেছিল, বামপন্থী সহ অন্যান্য তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধীরা এত অল্প সময়ে সব প্রার্থী জোগাড় করে নির্বাচনে সব কেন্দ্রে প্রার্থী দিতে পারবে না। কিন্তু তাদের ধারণা ভুল প্রমাণ করে শুরুর দিন থেকেই বামপন্থী সহ অন্যান্যরা তাদের প্রার্থীপদ ঘোষণা এবং মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ শুরু করে। এই দেখে তারা আতঙ্কিত হয় এবং পুলিশ প্রশাসনের একাংশকে সাথে নিয়ে দলীয় সমাজবিরোধীদের সংগঠিত করে প্রার্থীদের হুমকি দিয়ে ভয় দেখিয়ে মনোনয়ন দেওয়ার কাজে বাধা সৃষ্টি করে। কিছু ক্ষেত্রে আক্রমণ ও রক্তপাতের ঘটনা ঘটে। যা প্রকটভাবে পরিলক্ষিত হয় ডোমকল, চোপড়া, মিনাখাঁ, ভাঙর সহ প্রায় ৪০-৫০ টি ব্লকে। এসবের মোকাবিলায় মানুষও পথে নামে এবং এই আক্রমণ ও ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে সিংহভাগ কেন্দ্রে মনোনয়ন জমা দিতে সমর্থ হয়। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর শুরু হয় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর্ব। এই পর্বেও প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের জন্য বিরোধী বামপন্থী ও সহযোগী প্রার্থীদের উপর তৃণমূল এবং পুলিশের হামলা, চাপ সৃষ্টি করা, ঘরবাড়ি ভাঙচুর ইত্যাদি ঘটনা অব্যাহত গতিতে ঘটতে থাকে এবং প্রাণহানীর মতো ঘটনাও ঘটে।
এই পর্বে প্রার্থীপদ রক্ষায় পার্টির নেতৃত্ব, কর্মী,সমর্থক, নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের এবং সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের সাহসী ভূমিকা অভিনন্দনযোগ্য। কিছু ক্ষেত্রে চাপ সহ্য করতে না পেরে এবং প্রতিরোধের দুর্বলতার কারণে প্রার্থীপদ প্রত্যাহারে বাধ্য হলেও এখনও বিপুল পরিমাণ আসনে আমাদের সহ তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী শক্তির প্রার্থীরা লড়াইতে আছে। তৃণমূল ও পুলিশের পক্ষ থেকে এই প্রচার পর্বেও মিথ্যা মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে প্রার্থী,নেতৃত্ব ও কর্মীদের মিথ্যা সাজানো অভিযোগের ভিত্তিতে মামলায় যুক্ত করে। যাতে তারা নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে না পারে তার জন্যই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করতে স্থানীয়ভাবে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ যেমন গড়ে তুলতে হবে তেমনি, এই বিষয়গুলি কমিশন এবং পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নজরে নিয়ে আসতে হবে। যদিও আমরা জানি,এদের মাধ্যমে কোনো সুরাহা পাওয়া যাবে না। তবুও এদের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা আদালতে জানিয়ে যাতে এদেরকে নিরপেক্ষ এবং সংবিধানসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য করা যায় সেই জন্য এই ধরনের আক্রমণের এবং ষড়যন্ত্রের ঘটনাগুলি নিয়মিত নথিভুক্ত করার জন্য গ্রাম এবং গ্রামপঞ্চায়েত ও ব্লকস্তরে সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করে পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখতে হবে। অভিযোগগুলি প্রার্থী অথবা ইলেকশন এজেন্টের মাধ্যমে প্রথমে স্থানীয় থানায় লিখিত আকারে নথিভুক্ত করাতে হবে এবং তা উচ্চতর আধিকারিকদের জানানোর পাশাপাশি পার্টির উচ্চতর কমিটির কাছে পাঠাতে হবে। যাতে পার্টির উচ্চতর কমিটি দ্রুত প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করতে পারে।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এই ষড়যন্ত্রের মধ্যেও নির্বাচনী প্রচারে গতি সৃষ্টি হয়েছে। বড়ো বড়ো সমাবেশের পরিবর্তে জোর দেওয়া হচ্ছে নিবিড় প্রচার, প্রার্থী সহ কর্মীদের সারাদিন বাড়ি বাড়ি প্রচার, সন্ধ্যায় সেই পাড়ায় সান্ধ্য বৈঠক এবং চিঠি দিয়ে ভোটারদের বুথসভা সংগঠিত করার কাজের উপরে। তাছাড়া ভোটের দিনে শান্তিপূর্ণ ভোটের লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি গড়ে তুলতে গঠন করতে হবে স্বেচ্ছাসেবকবাহিনী। এখনই তালিকাভুক্ত করতে হবে শক্ত সামর্থ্য বুথ এজেন্ট এবং কাউন্টিং এজেন্টদের নাম। বুথে বুথে আহ্বান জানানো হয়েছে কর্মীদের নিয়ে ধারাবাহিক স্কোয়াড মিছিল করার জন্য। মানুষের মধ্যে সার্বিক তৃণমূলকে হারানোর জেদি মনোভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। সরকার, কমিশন এবং তৃণমূল দলের লক্ষ্য বিরোধী শূন্য পঞ্চায়েত গঠন। বিপরীতে সাধারণ মানুষের মধ্যে লুটেরাদের হটিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপি মুক্ত মানুষের পঞ্চায়েত গড়ে তোলার মনোভাব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে দেখা যাচ্ছে। এখন আমাদের নেতা-কর্মীদের চ্যালেঞ্জ হলো, সাধারণ মানুষের এহেন মনোভাবকে সংহত করে মানুষের প্রতিরোধের শক্তি বাড়িয়ে সেই শক্তির সামনের সারিতে থেকে অবাধ একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষের পঞ্চায়েত গড়ে তোলার কাজকে সম্পন্ন করা। এই চ্যালেঞ্জকে পাখির চোখ করে গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তৃণমূল এবং বিজেপি-কে পরাস্ত করে জয়কে ছিনিয়ে আনার লক্ষ্যে, গণনা পর্যন্ত আমাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে।