৫৯ বর্ষ ২০ সংখ্যা / ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১ / ১৫ পৌষ, ১৪২৮
সিপিআই(এম) পূর্ব বর্ধমান জেলা ২৫তম সম্মেলন
৫৫ জনের জেলা কমিটি গঠিত
সম্মেলন থেকে ৫৫ জনের নতুন জেলা কমিটি সর্বসম্মতিতে গঠিত হয়েছে। এই কমিটিতে নতুন মুখ ১২ জন। সম্মেলন মঞ্চে নবনির্বাচিত জেলা কমিটির প্রথম বৈঠক হয়। এই বৈঠকে সৈয়দ হোসেন জেলা সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। নতুন জেলা কমিটিতে ৩ জন বিশেষ আমন্ত্রিত আছেন। এঁরা হলেনঃ সুকান্ত কোঙার, অঞ্জন চ্যাটার্জি এবং দুর্যোধন সর। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ২৩তম পার্টি কংগ্রেসের পর সম্পাদকমণ্ডলী গঠিত হবে। এই মধ্যবর্তী সময়ে বিদায়ী সম্পাদকমণ্ডলীর যাঁরা নতুন জেলা কমিটিতে নির্বাচিত হয়েছেন তাঁরা কাজ চালাবেন। পার্টির রাজ্য ২৬ তম সম্মেলনের জন্য ১৫ জন প্রতিনিধি সর্বসম্মতিতে নির্বাচিত হয়েছেন। বিকল্প প্রতিনিধি রয়েছেন ৭ জন।
সম্মেলনে উপস্থিত ৩৩১ জন
সম্মেলনে নির্বাচিত প্রতিনিধি ও দর্শকের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৩১৭ ও ২০। প্রতিনিধি পরিচিতি পত্রের রিপোর্টে বলা হয়েছে, সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন৩১২ জন প্রতিনিধি এবং ১৯ জন দর্শক, মোট ৩৩১ জন। এর মধ্যে মহিলা ৪০ জন ও সর্বক্ষণের কর্মী ১০৯ জন। প্রতিনিধি, দর্শক ও সম্মানিত প্রতিনিধিদের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক ছিলেন মহারানী কোঙার, তাঁর বয়স ৮৭ বছর। সবচেয়ে কনিষ্ঠ সাম্যসংহিতা ঘোষ, ২৫ বছর। শ্রেণিগত উৎসের বিচারে প্রতিনিধি ও দর্শকদের মধ্যে শ্রমিক ১৮, খেতমজুর ৩৯ এবং কৃষক ১১৯ জন। কারাবাসের অভিজ্ঞতা রয়েছে ৮৬ জনের এবং আত্মগোপনের অভিজ্ঞতা রয়েছে ১২২ জনের। সবচেয়ে বেশিদিন কারাবাস করেছেন প্রদীপ সাহা, ২ বছর ১০ মাস ১৭ দিন এবং আত্মগোপন দেবু রায়ের, ৮ বছর। গত চার বছরে তৃণমূলের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন ১১২ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন ২৩ জন। তৃণমূল জমানায় গত ১০ বছরে মিথ্যা মামলায় আসামী হয়েছেন ৭৮ জন।
৩৬টা মিথ্যা মামলা
জেলা সম্মেলনের প্রতিনিধি ভাতার ১ এরিয়া কমিটির নজরুল হকের নামে ৩৬টা মিথ্যা মামলা করেছে তৃণমূল প্রশাসন। জেলা সম্মেলনে উপস্থিত ৩৩১ জনের মধ্যে গত দশ বছরে তৃণমূল জমানায় মিথ্যা মামলায় আসামী হয়েছেন মোট ৭৮ জন। মিথ্যা মামলার সংখ্যা বিচারে ১৫ ওপর মামলা ৭ জনের, ১৪টি মামলা ১ জনের, ১২টি মামলা ৩ জনের, ১১টি মামলা ১ জনের, ৯টি মামলা ৩ জনের, ৮টি মামলা ৩ জনের, ৭ টি মামলা ৪ জনের, ৬টি মামলা ২ জনের, ৫টি মামলা ৮ জনের, ৪টি মামলা ১১ জনের, ৩টি মামলা ১৩ জনের, ২টি মামলা ৩০ জনের এবং ১টি মামলা রয়েছে ৩১ জনের নামে।
সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাবাবলি -
সম্মেলনে সর্বসম্মতিতে গৃহীত হয়েছে ১০টি প্রস্তাব। এর মধ্যে অন্যতম হলো, ২০২২ সালের ২৩-২৪ ফেব্রুয়ারি সারা ভারত সাধারণ ধর্মঘটকে সর্বাত্মক সফল করার আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব। প্রসঙ্গত, ১২ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের সর্বভারতীয় ফেডারেশনগুলি এই ধর্মঘট ডেকেছে। গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়েছেঃ “ধর্মঘট সফল করার জন্য যৌথ মঞ্চের উদ্যোগে নিবিড় প্রচার সংগঠিত করতে হবে। রাজ্য, জেলা, এরিয়া সমন্বয় কমিটিভিত্তিক কনভেনশন করতে হবে। সর্বত্র মানবশৃঙ্খল, মশাল মিছিল, সই সংগ্রহ, সভা, সমাবেশ, দেওয়াল লিখন, পোস্টারিং, দাবিসমূহ যুক্ত করে হ্যান্ডবিল প্রচারসহ নিবিড় প্রচার সংগঠিত করতে হবে।”
গৃহীত অন্য প্রস্তাবগুলি হলোঃ
১) সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে,
২) স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষে দেশ বাঁচাও, গণতন্ত্র বাঁচাও,
৩) দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে,
৪) রাজ্যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে, দুর্নীতি ও লুম্পেনরাজের বিরুদ্ধে,
৫) ত্রিপুরায় জনগণের সংগ্রামের পাশে দাঁড়াও,
৬) সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন রুখতে,
৭) কৃষি বাঁচাও, কৃষক বাঁচাও, দেশ বাঁচাও এবং
৮) শিল্প ও শিল্পায়নের বিকাশ চাই, শ্রম কোড বাতিল করো।
প্রতিনিধি অধিবেশনের শুরুতে শহিদ স্মরণে ও শোকপ্রস্তাব পেশ করেন সুকান্ত কোঙার।