E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

বিশ্ব সংবাদ

প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রেপ্তার

প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফৌজদারি অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো রাষ্ট্রপতি গ্রেপ্তার হলেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অবৈধ যৌন সম্পর্ক চাপা দিতে ঘুষ দেওয়া সহ ৩৪ দফা ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ৪ এপ্রিল তিনি গ্রেপ্তার হন। নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন আদালতে তাঁকে হাজির করা হলে তিনি ‍‌নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। যার সঙ্গে ট্রাম্পের অবৈধ সম্পর্ক ছিল বলে বলা হয়েছে সেই মহিলা স্টর্মি ড্যানিয়েলস দাবি করেছেন ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্প তাকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন যাতে আমি ওই সম্পর্কের কথা কোথাও না বলি। তিনি আরো জানিয়েছেন ২০০৬ সালেই ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন হয়েছিল। এর আগে দু’বার মার্কিন কংগ্রেসে ট্রাম্পের ইমপিচ হয়েছিল। কিন্তু মার্কিন সিনেটে তিনি কখনও ফৌজদারি অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত হননি। ২০২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবার কথা। তার আগে রিপাবলিকান দলের নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রেপ্তার মার্কিন দেশে খুব আলোড়ন তুলেছে।

ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নতুন করে উত্তেজনা তৈরির মার্কিনি কৌশল

ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনকে ঘিরে রাখার নানাবিধ সাম্রাজ্যবাদী কৌশল দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। ওই উদ্দে‍‌‍‌শ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং ভারতকে নিয়ে চতুর্দেশীয় জোটও (কোয়াড) কয়েক বছর হলো গঠিত হয়েছে। এই চারটি দেশের যৌথ যুদ্ধ মহড়াও নিয়মিত হয়ে থাকে। নতুন ঘটনা হলো, ১৪ মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যা‍‌লিফোর্নিয়ার এক নৌ-ঘাঁটিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিসি, এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক এক বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে চীনকে লক্ষ্যে রেখেই অস্ট্রেলিয়াকে পরমাণু শক্তিসম্পন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তিধর তিনটি সাব মেরিন সরবরাহ করা হবে। সেগুলি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেই ব্যবহৃত হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই সেগুলি দেবে। আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে ২০৩০ সালের গোড়া থেকেই ওই পরিকল্পনা কার্যকর হবে। বৈঠকের পর তিন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, অস্ট্রেলিয়া চাইলে ওই ধরনের আরও দু’টি সাবমেরিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরবরাহ করতে তৈরি থাকবে।

এই চুক্তি সম্পর্কে চীন তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। চীনের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উক্ত তিন দেশের এই পরিকল্পনা এবং পদক্ষেপ হলো তাদের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থেই। এই পদক্ষেপকে চীন ভুল এবং অত্যন্ত বিপজ্জনক পথ বলে মন্তব্য করেছে। চীন বলেছে, এর ফলে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উত্তেজনা ও অশান্তি আরও বৃদ্ধি পাবে। চীনের মুখপাত্র ওয়াঙ ওয়েন বিন বলেছেন, এই পরিকল্পনার মধ্যে দিয়ে ওই তিন দে‍‌শের ঠাণ্ডা যুদ্ধ চালিয়ে যাবার মানসিকতারই প্রকাশ ঘটেছে। এরা বি‍‌শ্বে ঠাণ্ডা যুদ্ধ বজায় রাখতে চায়। এরফলে বিশ্বে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাবে, আন্তর্জাতিক পরমাণু সম্প্রসারণবিরোধী ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এর ফলে বি‍‌শ্বে শান্তি ও স্থা‌য়িত্ব বিঘ্নিত হবে বলে চীন জানিয়েছে।

ইজরা‍য়েলে প্রবল গণবিক্ষোভ - পিছু হটলো সরকার

গত এক সপ্তাহের মধ্যে এক অভূতপূর্ব গণবিক্ষোভের সাক্ষী হয়ে রইলো ইজরায়েল। দেশের জায়নবাদী সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সংবিধান সংশোধনের যে প্রস্তাব এনেছিলেন তাকে কেন্দ্র করেই দেশ তোলপাড় হয়ে উঠেছিল। সংশোধনী প্রস্তাবে শীর্ষ আদালতের ক্ষমতা খর্ব করে দেশের বিচার ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটাতে চাওয়া হয়েছে। এক কথায়, বিচার ব্যবস্থার ঊর্ধ্বে প্রশাসনিক কর্তা ও প্রশাসনিক বিভাগকে স্থান দিতে চাওয়া হয়েছে। জানুয়ারি মাস থেকেই পরিকল্পনা কার্যকর করার উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। তখন থেকেই প্রতিবাদও শুরু হয়েছিল। গত ২৩ মার্চ ১২০ সদস্যের সংসদে ওই সংশোধনী প্রস্তাব পেশ হলে পক্ষে ৬১ এবং বিপক্ষে ৪৭ ভোটে তা গৃহীত হয়। এরপরই গোটা দেশ প্রতিবাদ, বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। পূর্ব জেরুজালেম থেকে তেল আভিভ সর্বত্র হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদে পথে নেমে আসেন। স্কুল-কলেজ‍‌-বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যাঙ্ক, সরকারি-বেসরকারি সমস্ত প্রতিষ্ঠান ও দপ্তর স্তব্ধ হয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ ট্রেড ইউনিয়নের ডাকে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক-কর্মচারী কাজ বন্ধ করে পথে নেমে আসেন। মন্ত্রীসভার মধ্যেও বিরোধিতা দেখা দেয়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী সংশোধনী প্রস্তাব প্রত্যাহারের পক্ষে বিবৃতি দিলে তাঁকে মন্ত্রীসভা থেকে বরখাস্ত করা হয়। বিভিন্ন দেশে ইজরায়েল দূতাবাসের কর্মীরাও কাজ বন্ধ করে দেন। আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে উড়ান বন্ধ হয়ে যায়। দেশের ২০টি শহরের মেয়রেরা অনশনে বসেন। সরকারের শরিক অতি দক্ষিণপন্থী দলগুলি পালটা বিক্ষোভে নামায় দেশে প্রায় গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই অবস্থায় ২৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু পিছু হটতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি সংশোধনী প্রস্তাব আপাতত স্থগিত রাখা হলো বলে ঘোষণা করেছেন। কিন্তু প্রত্যাহারের কথা বলেননি। এক মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিবাদ-বিক্ষোভ আপাতত স্তিমিত হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।