E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

ব্রেক্সিট পূর্ণতা লাভ করল

লালন ফকির


দীর্ঘ চার বছরের বেশি সময়ের ব্যবধানে অবশেষে ইয়োরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিদায় সম্পন্ন হলো। ২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে গণভোটে ৫১.৯শতাংশ মানুষ ব্রেক্সিটের পক্ষে রায় দেন। গত বছর ৩০ ডিসেম্বর ইয়োরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট আরসালা ভন ডার লিয়েন এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরদান করার মধ্য দিয়ে এই পর্বের সমাপ্তি ঘটে। এই দীর্ঘ চার বছর ছিল ঘটনাবহুল।

ইয়োরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার (ব্রেক্সিট) পক্ষে সামগ্রিকভাবে যুক্তরাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ভোট দিলেও সর্বত্র একইরকম রায় জনগণ দেননি। ইংল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে গড়ে ৫৩.৪ শতাংশ এবং ওয়েলসের ৫২.৫৩ শতাংশ মানুষ ব্রেক্সিটের পক্ষে মত দিলেও স্কটল্যান্ডের ৬২ শতাংশ, উত্তর আয়ারল্যান্ডের ৫৫.৭ শতাংশ মানুষ ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ভোট দেন।অবশ্য গণভোটের সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক্সিট লাগু হয়নি।এর জন্য দীর্ঘ প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে হয়েছে। ইইউ চুক্তির ৫০ তপশিল কার্যকর করতে হয়েছে।ব্রিটিশ সরকার চার বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চালিয়েছে বহু রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে।একটা সময়ে ধারণা হয়েছিল হয়তো নো-ডিল অর্থাৎ বিনা চুক্তিতেই ব্রেক্সিট কার্যকর করতে হবে। প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ সালে ব্রিটেন ইয়োরোপিয়ান ইকনমিক কমিউনিটিতে (ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়ন আগে এই নামে পরিচিত ছিল) যোগ দেয়। এসম্পর্কিত ১৯৭৫ সালের গণভোটে ৬৭ শতাংশ মানুষ যোগদানের পক্ষে ভোট দেন।

ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে যখন গণভোট অনুষ্ঠিত হয় তখন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ডেভিড ক্যামেরন। গণভোটের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর তিনি পদত্যাগ করেন এবং তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব টেরেসা মে কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান এবং দেশের প্রধান নির্বাচিত হন। গণভোটের সময়ে তিনি ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়নে থাকার পক্ষে ছিলেন, যদিও টোরি পার্টির অধিকাংশ সমর্থকরা ছিলেন ব্রেক্সিট সমর্থক। তবে এজন্য তাঁর প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হতে বিশেষ অসুবিধে হয়নি। ব্রেক্সিটপন্থী বরিস জনসনকে তিনি বিদেশসচিব পদেও নিয়োগ করেন। জনসনই বর্তমানে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী। টেরেসা মে নিজে ব্রেক্সিটের বিরোধী হলেও ইয়োরোপীয় ইউনিয়নের ভিতরে থাকার কোনো চেষ্টা তিনি করবেন না বা ব্রেক্সিট কার্যকর করার জন্য কোনো তাড়াহুড়োও তিনি করবেন না জানিয়ে দেন।

ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে গোটা দেশ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। সামাজিক অবস্থান বা রাজনৈতিক মতাদর্শ ব্যতিরেকেই এই বিভাজন ঘটে।সরকার এবং বিরোধীপক্ষের বহু সাংসদ ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়নে থেকে যাবার পক্ষে মতপ্রকাশ করলেও উভয়পক্ষেই এর বিরোধীরাও রয়েছেন। ব্রেক্সিটপন্থীদের মতে ইয়োরোপীয় ইউনিয়নে গণতন্ত্রের অভাব রয়েছে। এর মধ্যে থাকার অর্থ সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হবে। কিন্তু এর বিরোধীরা মনে করে সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হলেও অন্যান্য ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। ব্রেক্সিটপন্থীদের মত, ইয়োরোপীয় ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে এলে অভিবাসন নীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, যার ফলে সরকারি পরিষেবা, আবাসন, কর্মসংস্হান প্রভৃতিতে চাপ কমবে। এছাড়াও ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য থাকার কারণে যে কোটি কোটি পাউন্ড দিতে হয় তার সাশ্রয় ঘটবে।ব্রিটেন অন্যান্য দেশের সঙ্গে ইচ্ছে মতন বাণিজ্যচুক্তি করতে পারবে।সর্বোপরি ইইউ’র ফাঁস থেকে মুক্ত হয়ে যেকোনো বিষয়ে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে।অন্যদিকে ব্রেক্সিটবিরোধীদের মতে ইইউ ছাড়লে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশ্বের বিভিন্ন ঘটনায় ব্রিটেনের প্রভাব কমলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। এছাড়া ব্রিটেন এবং ইইউ’র মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কে বাধা সৃষ্টি হতে পারে, শেষপর্যন্ত যা কর্মহীনতা বৃদ্ধি করবে এবং বিনিয়োগ কমাবে।

ব্রিটেনের গণভোটের প্রভাব আন্তর্জাতিকস্তরেও প্রতিফলিত হতে শুরু করে। ২০১৬ সালের ২৪ জুন বিশ্ব জুড়ে শেয়ার মার্কেটে দুই লক্ষ কোটি ডলার ক্ষতি হয়। মার্কিন মুদ্রা ডলারের নিরিখে পাউন্ডের মূল্য ৩১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে এসে ঠেকে।

ব্রেক্সিট চুক্তি কার্যকর করার প্রক্রিয়া শেষ করার তারিখ ছিল ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর। কিন্তু এক সপ্তাহ আগেই ব্রিটিশ সরকার চুক্তি চূড়ান্ত করে। চুক্তি অনুযায়ী এই রূপায়ণের জন্য এক বছর সময়কে ক্রান্তিকালীন পর্ব হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়ে যদি ব্রিটেন কোনো চুক্তি ছাড়াই বেরিয়ে যেত তাহলে তাকে ইইউ’র সঙ্গে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার শর্তে চুক্তিবদ্ধ হতে হতো। ইইউ’র সঙ্গে ব্রিটেনের চুক্তিতে ব্রিটেন একক বাজারের সুবিধা আর না পেলেও গ্রেট ব্রিটেনের অন্যতম অংশ উত্তর আয়ারল্যান্ড ইইউ-র কাস্টমস ইউনিয়নের অংশ বলে বিবেচিত হবে। আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে উত্তর আয়ারল্যান্ডের দৃঢ় সীমারেখাকে কখনই আইরিশ জনগণ মন থেকে মেনে নিতে পারেননি।

সমুদ্রে মৎস্য শিকারের প্রশ্নে ব্রিটেনকে বেশ কিছু সুবিধা অন্যদের দিতে হয়েছে। এর সঙ্গে ব্রিটিশ জনগণের এক উল্লেখযোগ্য অংশের ভাবাবেগ জড়িত বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। ইতিমধ্যে ট্রলার চালকদের এক উল্লেখযোগ্য অংশ তাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে। এইরকম আরও কিছু প্রসঙ্গ চুক্তিটিকে চূড়ান্ত করার পথে বাধা সৃষ্টি করে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সামনে চুক্তি চূড়ান্ত করার প্রশ্নে বাধ্যবাধকতা ছিল। প্রথমত, শাসকদল টোরি পার্টির মধ্যে ব্রেক্সিটের পক্ষে জোরালো সমর্থক ছিলেন বরিস জনসন। ফলে একে চূড়ান্ত করার প্রশ্নে তার নিজের বাধ্যবাধকতা ছিল।দ্বিতীয়ত, শাসক এবং বিরোধী উভয় দলের মধ্যে ব্রেক্সিটপন্থীদের চাপ তাঁর ওপর ছিল, যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই চুক্তি চূড়ান্ত করা যায়। তৃতীয়ত, নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরাজয় এই চুক্তি চূড়ান্ত করার প্রশ্নে বরিস জনসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প ছিলেন বরিস জনসনের আদর্শগত বন্ধু। এছাড়া ট্রাম্প ছিলেন ব্রেক্সিটের একজন কট্টর সমর্থক। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ব্রেক্সিট কার্যকর হলে ব্রিটেনের সঙ্গে অন্যান্য দেশগুলির যাতে ইতিবাচক চুক্তি সম্পাদিত হয় তার জন্য তিনি বিশেষ উদ্যোগ নেবেন। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটরা চেয়েছিল, ব্রিটেন ইইউ’র অন্তর্গত সদস্য হিসাবে থাকুক। ডেমোক্র্যাট নেতা বারাক ওবামা প্রকাশ্যেই ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে ভোট দেবার জন্য ব্রিটিশ নাগরিকদের আহ্বান করেছিলেন। জো বাইডেনের অবস্থানও একই।তিনি এই প্রশ্নে নিকট ভবিষ্যতে বিশেষ কোনো সুবিধা বরিস জনসনকেও দিতে রাজি নন। এই প্রসঙ্গে বলা প্রয়োজন, বরিস জনসন যখন লন্ডনের মেয়র ছিলেন তখন ওবামার প্রতি তাঁর বর্ণবৈষম্যমূলক একটি উক্তি মার্কিনমুলুকে যথেষ্ট উত্তেজনার কারণ হয়েছিল। শুধু তাই নয়, হিলারি ক্লিন্টন যখন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন তখন তাঁর বিরুদ্ধে বরিসের মন্তব্যে ডেমোক্র্যাটরা যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।তাছাড়া ট্রাম্পের ‘আমেরিকান ফার্স্ট’ নীতিতে ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রিটিশ নাগরিকরাও ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।

এর পাশাপাশি আরসালা ভন ডার লিয়েন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে জার্মানি এবং ফ্রান্সের চাপের সম্মুখীন হন। ইইউ’র এই দুইটি প্রভাবশালী রাষ্ট্র চাইছিল ‘নো-ডিল’ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসে ব্রেক্সিট কার্যকর হোক। ফ্রান্স এবং জার্মানির চাপ উপেক্ষা করা ইইউ প্রধানের ছিল না, কারণ কোভিড মহামারী প্রতিরোধে ইইউ তার সদস্য রাষ্ট্রগুলির জন্য ৯২ হাজার ৩০০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছিল।

ব্রিটিশ সংসদ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ‘ইইউ-ইউকে ট্রেড অ্যান্ড কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট’ অনুমোদন করে। বিরোধী দল লেবার পার্টি চুক্তির বিভিন্ন ধারা সম্পর্কে আপত্তি জানানো সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত এই চুক্তির পক্ষেই ভোট দেয়। কারণ, তাদের আশঙ্কা ছিল এই চুক্তি ব্রিটিশ সংসদে অনুমোদিত না হলে আরও কঠিন শর্ত সংবলিত চুক্তিকে মেনে নিতে হবে। সংসদে শুধুমাত্র স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি এবং লিবারাল ডোমোক্র্যাটিক পার্টি চুক্তির বিরুদ্ধে ভোট দেয়। সংসদে এই চুক্তি সম্পর্কিত ১২৪৬ পৃষ্ঠার দলিল এমন সময়ে বিলি করা হয় যে, সাংসদরা অধ্যয়নের সুযোগ পাননি।

টোরি পার্টির সাংসদদের একাংশ এই চুক্তিতে ব্রিটিশ জনগণের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা বলে আখ্যা দিয়েছে। ব্রিটিশ এবং ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়নের অনেকেই মনে করেন উভয়ের স্বার্থের সঙ্গে যুক্ত অনেক বিষয়ই অমীমাংসিত রয়ে গেছে। আগামী বছরগুলিতে বিষয়গুলি মীমাংসার জন্য আরও দীর্ঘ আলোচনার প্রয়োজন। বিশেষ করে বিদেশনীতি, নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা সম্পর্কে এই দলিল কার্যত নীরব রয়েছে।ব্রিটেন সামরিক দিক থেকে বরাবরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ। অন্যদিকে জার্মানি ও ফ্রান্স যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত ন্যাটো যুদ্ধজোটের অংশীদার তবুও তাদের মধ্যে সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনায় দূরত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্প্রতি গড়ে ওঠা বানিজ্যযুদ্ধের প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনের সঙ্গে নতুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তির ফলে ইয়োরোপীয় কোম্পানিগুলি চীনে নতুন নতুন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে পারবে। একই ধরনের সুযোগ পাবে ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়নে চীনা কোম্পানিগুলিও। ট্রাম্প প্রশাসন এবং জো বাইডেনের টিম উভয়েই এর সমালোচনা করেছে। চীন এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হচ্ছে। বরিস জনসন ব্রেক্সিট- পরবর্তীকালে চীনের সঙ্গে বৃহত্তর বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু তিনি তাঁর অবস্থান পরিবর্তন করেন বিশেষ করে ট্রাম্প প্রশাসন চীনের বিরুদ্ধে ঠাণ্ডাযুদ্ধ শুরু করার পর।

জার্মান এবং ফরাসি নেতৃত্ব ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়নের নিজস্ব সেনাবাহিনী গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। ইইউ প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়নখাতে ১,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। মার্কিন প্রশাসন প্রতিরক্ষাখাতে তাদের বরাদ্দ বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি করার পরই ইইউ এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরই সামরিক বাজেট বরাদ্দের দিক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরই ব্রিটেনের অবস্থান। আর্থিক বাণিজ্যিক দিক থেকে ব্রিটেনের সঙ্গে ইয়োরোপিয়ান ইউনিয়নের সম্পর্ক মিশ্র ধরনের। যেমন ইইউ’র সঙ্গে আর্থিক বাণিজ্যে ব্রিটেনের উদ্বৃত্ত ২,৪০০ কোটি ডলার। পণ্য বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্রিটেনের ঘাটতি ১২,৯০০ কোটি ডলার। কিন্তু অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, ব্রেক্সিট-পরবর্তীকালে এই ঘাটতি আর্থিক বাণিজ্যের উদ্বৃত্তকে ছাপিয়ে গিয়ে বিপুল আকার ধারণ করবে।

অন্যদিকে, ব্রেক্সিট-পরবর্তীকালে যুক্তরাজ্য নিজেই ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়েছে। ২০১৬ সালের গণভোটে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যেমন ব্রেক্সিটের পক্ষে ছিলেন তেমনি স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইইউ-তে থাকার পক্ষে মত দিয়েছিলেন, আগেই বলা হয়েছে। এখন ব্রেক্সিট সম্পন্ন হওয়ার পর স্কটিশ সংসদে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেরিয়ে গিয়ে স্বাধীন স্কটল্যান্ডের জন্য গণভোটের দাবি উঠেছে। ২০১৪ সালে একটি গণভোটে বেশিরভাগ স্কটিশ জনগণ যুক্তরাজ্যে থাকার পক্ষে যদিও ভোট দিয়েছিলেন, ব্রেক্সিটের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী মে মাসে আবার যুক্তরাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হবার জন্য গণভোটের দিকে স্কটল্যান্ড যেতে পারে বলে অভিজ্ঞ মহলের অভিমত।আইরিশ সাগরে পণ্য নিয়ন্ত্রণ বলবৎ হওয়ায় ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছে। ব্রেক্সিট-পরবর্তীকালে ভূ-রাজনৈতিক নানা সমস্যা এই অঞ্চলে ঘটিয়ে উঠছে - সেগুলির সমাধান আগামীদিনের চ্যালেঞ্জ।