E-mail: deshhitaishee@gmail.com  | 

Contact: +91 33 2264 8383

লাও পিপলস রেভোলিউশনারি পার্টির একাদশ কংগ্রেসে সিপিআই(এম)’র অভিনন্দন বার্তা


লাও পিপলস রেভোলিউশনারি পার্টি (এলপিআরপি)’র একাদশ কংগ্রেসকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) এবং এই কংগ্রেসের সার্বিক সাফল্য কামনা করেছে। এই অবকাশে এলপিআরপি’র সমস্ত সদস্যকে এবং লাও জনগণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের সমস্ত জনগণকেও শুভেচ্ছা জানিয়েছে সিপিআই(এম)।

গত ১৪ জানুয়ারি প্রেরিত এক অভিনন্দন বার্তায় সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটি বলেছেঃ
‘‘এলপিআরপি’র একাদশ কংগ্রেস এক অতি যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই সময়ে উন্নয়নের পুঁজিবাদী মডেলের শূন্যগর্ভতা পুরোদস্তর উন্মোচিত হয়ে গেছে। বহু উন্নত ও উন্নয়নশীল পুঁজিবাদী দেশে বিশ্ব আর্থিক সঙ্কটের প্রভাব এবং এর ফলস্বরূপ ক্রমবর্ধমান আয় ও সম্পদের বৈষম্য, বেকারত্ব ও দরিদ্রতা অব্যাহত রয়েছে। এইরকম এক সময়েই এসেছে কোভিড-১৯ অতিমারীর আঘাত এবং নিজের দেশের জনগণকে সুরক্ষা দিতে ওই দেশগুলির ব্যর্থতার মধ্য দিয়েও আরেকবার তাদের সেই শূন্যগর্ভতা প্রকাশ হয়েছে। অতিমারীর প্রকোপে দেশগুলির স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং এর ফলে শত-হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বের এই ধরনের ক্রমবর্ধমান কঠিন, পরিবর্তনশীল ও অঅনুমেয় পরিস্থিতি এবং ভয়ঙ্কর কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের মধ্যে লাওস বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিরাট সাফল্য অর্জনের সাথে ধারাবাহিক বিকাশকে নথিবদ্ধ করেছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এলপিআরপি’র নেতৃত্বাধীন সরকার সেদেশের সমস্ত জাতিগোষ্ঠীর জনগণের জীবনজীবিকাকে সুনিশ্চিত করেছে এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী দারিদ্র্য দূরীকরণে অগ্রগতি ঘটিয়েছে। এলপিআরপি’র নেতৃত্বাধীন সরকার অতিমারী ছড়িয়ে-পড়া নিয়ন্ত্রণেও দৃষ্টান্তমূলক কাজ করেছে। এই দেশেই সবচেয়ে কম সংখ্যক, মাত্র ৪১ জন কোভিডে আক্রান্ত হ‍‌য়েছিলেন এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, একজনেরও কোভিডে প্রাণহাণি ঘটেনি। লাওসে জনগণতান্ত্রিক শাসনের উৎকৃষ্টতা বিধানে এবং সমাজতন্ত্রের অভিমুখে এর যাত্রায় এলপিআরপি’র ভূমিকা নজির হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

আমরা জানি, এই একাদশ কংগ্রেসে এলপিআরপি’র নেতৃত্বে গত পাঁচ বছরে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে যে সাফল্যগুলি অর্জিত হয়েছে সেগুলির পর্যালোচনার সাথেই পরবর্তী পাঁচ বছরের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থার খসড়াও চূড়ান্ত হবে।

আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, একাদশ কংগ্রেসে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ লাওসকে জাতীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং জনগণতান্ত্রিক শাসনের সযত্ন-লালন অব্যাহত রাখাকে সুনিশ্চিত করবে, শক্তিশালী করবে সমাজতন্ত্রের অভিমুখে এর যাত্রার ভিত্তিমূলকে।

প্রিয় কমরেডগণ,

আমাদের দেশ ভারতে, এরকম বেড়ে চলা আয় বৈষম্য, ক্রমবর্ধমান বেকারী এবং প্রকট দারিদ্র্যসহ অর্থনীতিতে সংকোচন আগে কখনো দেখা যায়নি। শ্রমিকশ্রেণি ও কৃষকদের অধিকারের উপর মারাত্মক আক্রমণ নামিয়ে আনা হচ্ছে। এই আক্রমণগুলির বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ সংগঠিত হচ্ছে। এর সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হলো, দিল্লি সীমান্তে ৪০দিনের বেশি সময় ধরে কৃষকরা অবস্থান করে চলেছে। শ্রমিক ও কৃষকরা যে দাবিগুলি উত্থাপন করেছে তার প্রতি মনোযোগ দেবার পরিবর্তে সরকার ক্রমবর্ধমানহারে স্বৈরাচারী পদক্ষেপসমূহকে অবলম্বন করে সমস্ত ধরনের বিরোধিতা ও প্রতিবাদকে দমন করতে চাইছে। সিপিআই(এম) সক্রিয়ভাবে সরকারের এই সব স্বৈরাচারী পদক্ষেপকে মোকাবিলা করছে এবং সংগ্রামরত কৃষকদের সমর্থনে সমাজের বিভিন্ন অংশকে ফের সমবেত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রাদে‍‌শিক সরকারগুলির কাজকর্মে আরোপিত বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সিপিআই(এম)’র নেতৃত্বাধীন কেরালার প্রাদেশিক সরকার কোভিড-১৯ অতিমারী এবং তার ফলস্বরূপ পরিযায়ী শ্রমিক সঙ্কটে যেভাবে সক্রিয় হয়েছে ও মোকাবিলা করেছে বিশ্বজুড়ে তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে এবং সেই উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে।

কমরেডগণ,
লাওস ও ভারত বহু সাধারণ সাংস্কৃতিক পরম্পরার অংশীদার। আমাদের দুই পার্টিও সংহতি এবং ভ্রাতৃত্বমূলক সম্পর্কে শক্তিশালী বন্ধনের অভিমতই পোষণ করে। একাদশ কংগ্রেসের মহতিক্ষণের এই সুযোগকে গ্রহণ করে আমাদের সেই সংহতির কথা পুনরুচ্চারণ করছি এবং ফের একবার কংগ্রেসের সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।

আমরা আত্মবিশ্বাসী, এই কংগ্রেস আমাদের দুই পার্টির মধ্যে ভ্রাতৃত্বমূলক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার পথ রচনা করবে।