জি-সেভেন ও ন্যাটো সম্মেলনে মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন
চলতি বছরের জুন মাসে লন্ডনে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সাতটি পুঁজিবাদী দেশ (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, কানাডা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালি) যা জি-সেভেন গোষ্ঠী বলে পরিচিত, তাদের শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর অব্যবহিত পরেই ত্রিশটি দেশকে নিয়ে গঠিত মার্কিন যুদ্ধজোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো)-র সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার দপ্তর ব্রাসেলসে। উভয় সম্মেলনেই মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন যোগদান করেন। এই দুই সম্মেলনের অব্যবহিত পরেই জেনিভাতে রুশ রাষ্ট্রপতির সাথে মিলিত হয়েছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন। মার্কিন রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হওয়ার পর জো বাইডেনের এই প্রথম বিদেশ সফর। তাছাড়া করোনা অতিমারীর পর জি-৭ গোষ্ঠীর এই প্রথম সম্মেলন। অতিমারীর কারণে গত বছর জি-৭ গোষ্ঠীর শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। এসব কারণে আন্তর্জাতিক মহলে জুন মাসের এইসব ঘটনাবলীকে কেন্দ্র করে ব্যাপক রাজনৈতিক তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়েছিল। প্রধানত, পূর্বতন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীন ও রাশিয়ার বিরোধিতার পরিবর্তে বহুপক্ষীয় সমঝোতার উপর বাইডেন কতটা গুরুত্ব আরোপ করতে চাইছেন, এটাই ছিল পর্যবেক্ষণের কেন্দ্রীয় বিষয়।
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলের মতে জুন মাসের শুরুতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন খুবই ব্যস্ত ছিলেন, কারণ তাঁর পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর ইয়োরোপীয় সহযাত্রী ন্যাটো যুদ্ধজোট এবং ইয়োরোপীয় ইউনিয়নকে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন না। এই দুই সংগঠন ট্রাম্পের কাছে ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছিল। হয়তো এই কারণেই লন্ডনের মাটিতে উপস্থিত হয়েই জো বাইডেন ঘোষণা করেন, ‘‘আমেরিকা পুরানো পথে ফিরে এসেছে।’’ ব্রিটিশ ভূখণ্ডে মোতায়েন থাকা মার্কিন সেনাবাহিনীকে আরও সুসংগঠিত করার প্রতিশ্রুতি তিনি রাখেন।
পূর্বেই উল্লেখিত হয়েছে করোনা অতিমারী ছড়িয়ে পরার পর জি-৭ গোষ্ঠীর এই প্রথম সম্মেলন। একথা সর্বজনবিদিত যে, করোনা অতিমারী প্রতিরোধে উন্নত পুঁজিবাদী দুনিয়া বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। এই সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সর্বাধিক সংখ্যার ঠিকানা হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ২০২০ সালের মাঝামাঝি নাগাদ তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি প্রচার শুরু করেন যে, এই অতিমারীর জন্য চীন দায়ী। প্রায় একই সময়ে মার্কিন প্রশাসন চীনের সাথে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করে। মার্কিন বিজ্ঞানীদের এবং মহামারী বিশেষজ্ঞদের একাংশ ঐক্যবদ্ধভাবে কোভিড-১৯-এর ভাইরাস উনান প্রদেশের পরীক্ষাগারে জন্ম নিয়েছে - এই ধরনের প্রচার শুরু করে। মার্কিন রাজনীতিমহলের একাংশও এই কোরাসে গলা মেলান।
বাইডেন প্রশাসন ট্রাম্পের চীনবিরোধী প্রচারে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি কিছুটা ঢোঁক গিলে এই অতিমারীর জন্য চীনকে দায়ী করে তার সাকরেদ দেশগুলির প্রতি সঙ্কেত প্রেরণ করতে চেয়েছে। ইয়োরোপের দক্ষিণপন্থী শাসকদলগুলি চীনকে দায়ী করেও বিভিন্ন দেশের সরকারের অযোগ্যতা এবং অপদার্থতাকে দায়ী করে বলেছে, এর জন্য ৪০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। ৪০ লক্ষ মৃত মানুষের দশ লক্ষ জি-৭ গোষ্ঠীভুক্ত দেশসমূহের নাগরিক। বিশ্বের সমস্ত নাগরিকের টীকাকরণের জন্য ছয় হাজার কোটি ডলারের প্রয়োজন। কিন্তু বিশ্বের সর্বাপেক্ষা ধনী রাষ্ট্রগুলির সংস্থা এই অতিমারী মোকাবিলায় কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে অগ্রসর হতে পারেনি। এরা মাত্র ১০০ কোটি ডোজ টীকা ২০২২ সালের মাঝামাঝি নাগাদ উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য ব্যবস্থা করতে পারবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর দ্বারা বিশ্ব জনসংখ্যার মাত্র দশ শতাংশের টীকাকরণ সম্ভব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব টীকাকরণের জন্য মাত্র ৫০০ কোটি ডলার বরাদ্দ করতে রাজি হয়েছে। এই পরিমাণ হলো মার্কিন সামরিক বাজেটের মাত্র এক শতাংশ। বাইডেন প্রশাসন আগামী বছরের সামরিক বাজেটের জন্য ৭৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে।
জি-৭ সম্মেলনে মার্কিন রাষ্ট্রপতি বাইডেন তাঁর পশ্চিমী বন্ধু রাষ্ট্রগুলির সাথে বিরোধের নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করেছেন। পশ্চিমী দেশগুলির সাথে বহুপক্ষীয় মিত্রতার মাধ্যমে এই মতবিরোধের অবসান করতে চেয়েছেন। বিশেষ করে যা ট্রাম্প প্রশাসনের শাসনকালে তৈরি হয়েছে। ইয়োরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত তিনটি দেশ বিশেষত জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে চীনের সাথে সৃষ্ট বিরোধ বা মার্কিন-রুশ বিরোধের বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখেনি। ইয়োরোপীয় দেশগুলি চীনের শক্তিশালী অর্থনীতির সাথে জোট বন্ধন করেছে। ইয়োরোপীয় দেশগুলির মধ্যে এই আশঙ্কা রয়েছে যে, বাইডেন প্রশাসন একবারের মেয়াদের জন্য ক্ষমতাসীন হয়েছে। পরবর্তীকালে ট্রাম্প বা এই ধরনের কট্টরপন্থীরা পুনরায় ক্ষমতাসীন হতে পারে।
এমনকি জাপানও এই মুহূর্তে চীন বিরোধী ভূমিকা গ্রহণে রাজি নয়, যদিও তারা চীনের সহযোগী শক্তি হিসাবে নিজেদেরকে মনে করে। চীনের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে বড়ো বড়ো জাপানি সংস্থাগুলি বিনিয়োগ করেছে। এই কারণে দক্ষিণ কোরিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা জি-৭ সম্মেলনে বিশেষ আমন্ত্রিত হিসাবে উপস্থিত ছিল। এই কারণে ব্রুনেই এবং ভারতও এই সম্মেলনে আমন্ত্রিত ছিল এবং এরা কেউই চীনকে অন্যায়ভাবে দোষারোপ করতে রাজি ছিল না। আসিয়ানভুক্ত দেশগুলির অন্যতম হলো ব্রুনেই, যারা চীনকে বিরোধী ভূমিকায় ঠেলে দিতে চায় না। এমনকি ভারত যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত কোয়াড সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত, তারাও দক্ষিণ-চীন সাগরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত নৌ মহড়ায় অংশ নিতে রাজি হয়নি। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারত হলো চীন, ব্রাজিল ও রাশিয়ার সাথে ব্রিক্স-এর সদস্য।
জি-৭ এর অভ্যন্তরে ব্রেক্সিট ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ব্রিটেনের সাথে ফ্রান্স এবং জার্মানির অপরিপক্ক সম্পর্ক রয়েছে। ফরাসি রাষ্ট্রপতি এম্যানুয়েল ম্যাক্রন যখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের উদ্দেশ্যে বলেন যে, উত্তর আয়ারল্যান্ডকে কখনও ব্রিটেনের অংশ বলে মনে করা যায় না, তখন তা সম্মেলনে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ব্রিটেন ইয়োরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পর এই আলোড়ন সৃষ্টি বিস্ময়কর।
যাই হোক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত তার সহযোগী জি-৭ ভুক্ত দেশগুলিকে বুঝিয়ে এক যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে রাজি করে, যার মধ্যে চীন বিরোধিতার উপাদান রয়েছে। বিবৃতিতে উনান পরীক্ষাগার ষড়যন্ত্রকে কার্যত স্বীকার করে নিয়ে বলা হয়েছে, এর ‘তদন্ত, রিপোর্টিং এবং স্বীকারোক্তি প্রদানের’ ব্যবস্থার কথা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন) প্রতি আবেদনে বিবৃতিতে পুনরায় এই অতিমারীর অনুসন্ধানে ব্রতী হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। প্রসঙ্গত, ডব্লিউএইচও চলতি বছরের প্রথমার্ধে এই অতিমারীর উৎস সম্পর্কে তদন্ত করে ঘোষণা করেছিল যে, এই অতিমারীর উৎসের সাথে চীনের কোনো সম্পর্ক নেই।
জি-৭ সম্মেলন শেষে প্রদত্ত বিবৃতিতে চীনের সফল এবং ভবিষ্যৎ সৃষ্টিকারী প্রকল্প বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পকে নিশানা করা হয়েছে। পশ্চিমী দেশগুলি এই প্রকল্প সম্পর্কে যে ধারণা সৃষ্টি করতে চাইছে তা হলো, এই প্রকল্পের সাথে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে যুক্ত করে ঋণের ফাঁদে জড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। জি-৭-এর আরও বক্তব্য হলো যে, চীন বাজার বহির্ভূত আর্থিক নীতি অনুসরণ করছে, যা বিশ্ব অর্থনীতির স্বচ্ছতা ও স্বাভাবিকতাকে নষ্ট করছে। জি-৭ সম্মেলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা নিজেরা বিআরআই-এর বিরুদ্ধে পালটা উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
জি-৭ বিবৃতি সম্পর্কে চীন কর্তৃপক্ষ তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করেছে। তাঁদের মতে এই বিবৃতি চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে জি-৭ সম্মেলনে ঝিনঝিয়াং, তাইওয়ান এবং হঙকঙের বিষয় আলোচনার মধ্য দিয়ে এইসব অঞ্চলে অস্থিরতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর পিছনে মার্কিন প্রশাসনের ষড়যন্ত্র রয়েছে।
জি-৭ সম্মেলনের পরই বাইডেন ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ত্রিশ দেশ বিশিষ্ট যুদ্ধজোট ন্যাটো’র সম্মেলনে হাজির হন। এর মধ্যেই ইউএস-ইইউ যৌথ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ন্যাটো যুদ্ধজোট এযাবৎকাল তথাকথিত রুশ আক্রমণ প্রতিরোধের মঞ্চ হিসাবে ব্যবহৃত হলেও সম্প্রতি আকস্মিকভাবে তা চীন বিরোধী মঞ্চে পরিণত হয়েছে। ন্যাটো সম্মেলন শেষে প্রকাশিত বিবৃতিতে চীনকে ‘সিস্টেমেটিক চ্যালেঞ্জ’ তৈরির অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ন্যাটোর সম্মেলনে মার্কিন রাষ্ট্রপতি বাইডেন বলেন, ‘চীনের বিরুদ্ধে অন্যদের দাঁড় করানোর দায়িত্ব গ্রহণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী।’ ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ ন্যাটো সম্মেলনে প্রকাশিত বিবৃতিতে চীনের নাম উল্লেখ হয়েছিল মাত্র একবার। কিন্তু এবারের সম্মেলনে একডজনের অধিকবারের জন্য চীনের নাম উল্লেখ হয়েছে। ন্যাটো সম্মেলনের পূর্বে মার্কিন বিদেশ সচিব লিয়ড অস্টিন বলেছেন যে, মার্কিন সামরিক নীতির প্রধান লক্ষ্য হলো এখন চীন।
এর অর্থ অবশ্য এই নয় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যের বৃত্ত থেকে রাশিয়া অদৃশ্য হয়ে গেছে। ন্যাটোর সম্মেলন শেষে প্রকাশিত বিবৃতিতে রাশিয়ার নাম অন্তত ৬০ বার উল্লেখিত হয়েছে। এই বিবৃতিতে ন্যাটো ভুক্ত দেশগুলির নিরাপত্তা রক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
ব্রাসেলস থেকে জো বাইডেন জেনিভাতে উড়ে যান। এখানে তিনি রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে যৌথ বৈঠকে আলোচনায় বসেন। উভয় নেতার মধ্যে এই বৈঠক বিগত দু’বৎসরের মধ্যে দ্বিতীয়বার অনুষ্ঠিত হলো। ট্রাম্পের শাসনকালে ডেমোক্র্যাটরা সাধারণভাবে রুশ বিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ ছিল। এর প্রধান কারণ হলো, এদের অভিযোগ ছিল ২০১৬ সালের মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পুতিন সাহায্য করেছিল ট্রাম্পকে, কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়ার নীতির কট্টর বিরোধী ছিল। রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ, সীমান্তে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ-এর ব্যবস্থা প্রভৃতি ব্যবস্থা গ্রহণ এর কয়েকটি নমুনা মাত্র। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চীনের উপর গুরুত্ব আরোপ করায় রাশিয়া সম্পর্কে মার্কিন নীতির কিছু অদলবদল ঘটানো হয়েছে।
পুতিন-বাইডেন যৌথ বৈঠকের শেষে উভয় দেশের সম্পর্ক দৃঢ় হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে। বৈঠক শেষে অনুষ্ঠিত যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে উভয় নেতাই আগামীদিনে বিশেষ বিশেষ ইস্যুতে বিশেষত আফগানিস্তান, ইরান এবং সিরিয়ার প্রশ্নে উভয় দেশ ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
পূর্বোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে এ কথা বলা চলে যে, আগামীদিনে মার্কিন বিদেশ নীতি ও সমরনীতি কোনো অভিমুখে পরিচালিত হবে তার ইঙ্গিত জি-৭ সম্মেলন, ন্যাটো সম্মেলন ও পুতিনের সাথে যৌথ বৈঠকের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে।