চীনের মধ্যস্থতায় ইরান-সৌদি আরব সম্পর্কের পুনঃস্থাপন
বিগত সাত বছরের শত্রুতা মিটিয়ে ইরান এবং সৌদি আরব পশ্চিম এশিয়ার এই দুই গুরুত্বপূর্ণ দেশ তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করল এবং পারস্পরিক সহযোগিতার চুক্তিগুলিকে পুনরায় সক্রিয় করার ঘোষণা করল। এই দুই দেশের বিরোধ মিটিয়ে শান্তিপূর্ণ সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তুলতে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। শি জিন পিঙ তৃতীয় দফায় চীনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার দু’সপ্তাহের মধ্যে ইরান-সৌদি আরবের দীর্ঘদিনের সংঘাত চীন মধ্যস্থতা করে মিটিয়ে দেবার পরে পশ্চিম এশিয়ায় চীনের এটি বড়ো কূটনৈতিক সাফল্য বলেই মনে করা হচ্ছে।
মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহেই ইরান এবং সৌদি আরবের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক পরামর্শদাতারা চীনের রাজধানী বেজিঙে গিয়ে চীনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াঙ য়ি’র মধ্যস্থতায় বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন এবং সেখানেই তারা ঐকমত্যের ভিত্তিতে শান্তি ও সহযোগিতার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
ইরান সিয়া-প্রধান রাষ্ট্র এবং সৌদি আরব সুন্নি-প্রধান রাষ্ট্র। এই নিয়ে তাদের বিরোধ দীর্ঘদিনের। সাত বছর আগে সিয়া ধর্মগুরু নিমক-আল নিমরকে ফাঁসি দিয়েছিল সৌদি আরবের সরকার। সেই ঘটনার পরে দু’দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল এবং বিরোধ ও শত্রুতা ক্রমাগতই বৃদ্ধি পেয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম এশিয়ায় নিজের আধিপত্য বিস্তারে ইরানের বিরুদ্ধে সৌদি আরবকে নানাভাবে মদত জুগিয়েছিল। সৌদি এতদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবেই থেকেছে। ফলে চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব ইরানের সাথে শান্তি সহযোগিতার চুক্তিতে আবদ্ধ হবার ঘটনা নিঃসন্দেহে পশ্চিম এশিয়ার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক রাজনীতির ওপর বড়ো আঘাত হিসেবেই বিবেচিত হবে। স্থির হয়েছে, দুই দেশই আর্থিক বাণিজ্য লগ্নি ইত্যাদি বিষয়ক সহযোগিতা চুক্তিগুলিকে শীঘ্রই চালু এবং দু’পক্ষই দূতাবাসগুলি পুনরায় চালু করবে।
রাশিয়া-বেলারুশ চুক্তি
ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে কূটনৈতিক টানা পোড়েন এবং তৎপরতার মধ্যে রাশিয়া বেলারুশে স্বল্প পাল্লার পরমাণু অস্ত্র মজুত করবে বলে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। প্রেসিডেন্ট পুতিন জানিয়েছেন বেলারুশ প্রেসিডেন্টের অনুরোধেই এই চুক্তি হয়েছে। একই সাথে প্রেসিডেন্ট পুতিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন পরমাণু অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার হাতেই থাকবে এবং পরমাণু অস্ত্র সংবরণ চুক্তি কোনোভাবেই লঙ্ঘিত হবে না।